'শুধু শপথ পড়িয়ে বাল্যবিবাহ রোধ হয়েছে বলে ঘোষণা দেওয়া যাবে না'

ফরিদপুরে আইনগতভাবে বিবাহ অনুষ্ঠান নিশ্চিতকরণ অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় ২০২১ সালের মধ্যে জেলাকে বাল্যবিবাহমুক্ত ঘোষণা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে। তবে এ উদ্যোগ শুধু সভা-সমাবেশ, অঙ্গীকার এবং শপথ গ্রহণের মধ্যে যাতে সীমাবদ্ধ না থাকে, সে বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
গতকাল রোববার সকাল নয়টার দিকে ফরিদপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গভর্ন্যান্স ইনোভেশন ইউনিটের মহাপরিচালক আবদুল হালিম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবদুল হালিম বলেন, ‘বর্তমানে দেশে বাল্যবিবাহের হার ৫২ শতাংশ। এই হার ২০২১ সালের মধ্যে শূন্যের ঘরে নামিয়ে আনার জন্য আমাদের সম্মিলিতভাবে বৈজ্ঞানিক পন্থায় নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে।’ তিনি বাল্যবিবাহ পড়ানোর ব্যাপারে কাজিদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘কোনো পক্ষ ও প্রভাবশালীর চাপের অজুহাত আর শোনা হবে না। কোনো কাজি বারবার এই অজুহাত দিলে তা সাজানো অজুহাত হিসেবে বিবেচনা করা হবে এবং ধরে নেওয়া হবে, তাঁর মনে সায় আছে বলেই তিনি এ কাজ করছেন। এটি একটি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। ১৯৭৪ সালের মুসলিম নিকাহ আইন অনুযায়ী ওই কাজিকে দুই বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা তিন হাজার টাকা জরিমানা করার বিধান রয়েছে।’
আবদুল হালিম আরও বলেন, কোনো জেলাকে বাল্যবিবাহমুক্ত ঘোষণা করতে হলে দুই বছরের পরিসংখ্যান ঘেঁটে এবং এক বছরের সাফল্যের আলোকে বিজ্ঞানসম্মত উদ্যোগ নিতে হবে। শুধু সভা, সমাবেশ, অঙ্গীকার বা শপথ পড়িয়ে ‘বাল্যবিবাহ রোধ হয়েছে’ বলে ঘোষণা দেওয়া যাবে না। তাহলে বিষয়টি হাস্যকর হয়ে উঠবে।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়ার সভাপতিত্বে এই পর্যালোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন ফরিদপুরের সিভিল সার্জন অরুণ কান্তি বিশ্বাস, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক এ এস এম আলী আহসান, জেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা দৌলতআনা আক্তার, জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক শেখ আকরামুল হক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পরিমল চন্দ্র মণ্ডল প্রমুখ।
মুক্ত আলোচনায় বক্তারা বাল্যবিবাহ রোধ করতে ইউনিয়ন কাজি অফিসগুলোকে ইউপি ভবন কার্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।