জাপানি দুই শিশু কার হেফাজতে থাকবে জানা যাবে ২৯ জানুয়ারি

ইমরান, এরিকো ও তাঁদের শিশুসন্তানেরা
ফাইল ছবি

জাপান থেকে আসা দুই শিশুর হেফাজত ও অভিভাবকত্ব পাওয়ার মামলায় যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়েছে। ২৯ জানুয়ারি রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন আদালত। ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান রোববার এ আদেশ দেন।

দুই শিশুর মায়ের আইনজীবী শিশির মনির প্রথম আলোকে বলেন, এই মামলায় আদালত বাদী ও বিবাদীপক্ষের আইনজীবীর যুক্তিতর্ক শুনেছেন। রায় ঘোষণার দিনও ঠিক করেছেন আদালত।

এর আগে ১৫ জানুয়ারি আদালত দুই শিশুর বক্তব্য শোনেন। আদালতকক্ষে সেদিন উপস্থিত ছিলেন দুই শিশুর জাপানি মা এরিকো নাকানো ও বাবা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইমরান শরীফ।

আইনজীবী শিশির মনির প্রথম আলোকে বলেন, দুই শিশুর মধ্যে বড় মেয়ে আদালতকে বলেছে, সে তার মায়ের সঙ্গে জাপানে চলে যেতে চায়। অন্যদিকে মামলার বাদী ইমরান শরীফ প্রথম আলোকে বলেন, মেজ মেয়ে আদালতকে বলেছে, সে বাবার সঙ্গে থাকতে চায়।

জাপান থেকে আসা দুই শিশুর হেফাজত ও অভিভাবকত্ব চেয়ে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার পারিবারিক আদালতে মামলা করেন ইমরান শরীফ। মামলায় বাদীপক্ষের তিনজন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আর বিবাদীপক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছেন জাপানি মা এরিকো।

জাপানের নাগরিক এরিকো ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইমরানের ২০০৮ সালের ১১ জুলাই বিয়ে হয়। তাঁদের তিনটি মেয়েসন্তান আছে। ২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি এরিকোর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন ইমরান। এরপর ওই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়েকে (বড় ও মেজো) নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি। ছোট মেয়ে জাপানে আছে।

তবে ইমরানের কাছ থেকে দুই মেয়েকে ফিরে পেতে ঢাকায় এসে ২০২১ সালের ১৯ আগস্ট হাইকোর্টে রিট করেন এরিকো। অন্যদিকে ছোট মেয়েকে ফিরে পেতে পৃথক একটি রিট করেন ইমরান। পৃথক রিটের ওপর শুনানি নিয়ে দুই শিশু তাদের বাবা ইমরানের হেফাজতে থাকবে বলে ওই বছরের ২১ নভেম্বর হাইকোর্ট আদেশ দেন। এ আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন এরিকো; যা চেম্বার আদালত হয়ে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে।

এরিকোর করা আবেদন (লিভ টু আপিল) নিষ্পত্তি করে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। আদেশে বলা হয়, ঢাকার পারিবারিক আদালতে থাকা মামলাটি (২০২১ সালে শিশুদের বাবার করা) নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জাপান থেকে আসা দুই শিশু তাদের মায়ের হেফাজতে থাকবে। শিশুদের বাবা তাদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন বলে আদেশে বলা হয়।

আদেশে আরও বলা হয়, মামলার পারিপার্শ্বিক বিষয় ও শিশুদের স্বার্থ বিবেচনায় তাদের এই আদালতের এখতিয়ারের বাইরে (দেশের বাইরে) নেওয়া যাবে না। আপিল বিভাগের আদেশের অনুলিপি পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট পারিবারিক আদালতকে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।