আদালতে খাঁচা স্থাপনের বিধান প্রশ্নে রুল

হাইকোর্ট ভবনফাইল ছবি

প্রতিটি আদালতে অভিযুক্ত আসামির জন্য খাঁচা স্থাপনের বিধান প্রশ্নে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও এস এম মাসুদ হোসাইন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ রুল দেন।

এর আগে আদালতের কক্ষ থেকে লোহার খাঁচা সরাতে নির্দেশনা চেয়ে ১০ আইনজীবীর করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। দেশের কোন কোন আদালতের ভেতরে (অধস্তন আদালতের এজলাসকক্ষ) লোহার খাঁচা রয়েছে, সে বিষয়ে ৬০ দিনের মধ্যে আইনসচিবকে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

আগের রিট সূত্রে ক্রিমিনাল রুলস অ্যান্ড অর্ডারস-এর ৮২ বিধি (অধস্তন আদালতে খাঁচা স্থাপন সংক্রান্ত) সংবিধানের ৩৫(৫) অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক উল্লেখ করে গত মাসে সম্পূরক আবেদনটি করা হয়।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

অধস্তন আদালতের অনুশীলন এবং কার্যপ্রণালি-সংক্রান্ত ৮২ বিধির ভাষ্য, প্রতিটি আদালতে অভিযুক্তের জন্য উপযুক্ত খাঁচা থাকবে। খাঁচাটি এমনভাবে তৈরি করতে হবে, যাতে কোনো আসামি সহজে পালাতে না পারে এবং খাঁচা থেকে আসামি যাতে পালাতে না পারে, সে জন্য সেখানে পর্যাপ্ত পুলিশ পাহারায় থাকবে। বিচার ও দণ্ড সম্পর্কে রক্ষণবিষয়ক সংবিধানের ৩৫(৫) অনুচ্ছেদ বলছে, কোনো ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেওয়া যাবে না কিংবা নিষ্ঠুর, অমানসিক বা লাঞ্ছনাকর দণ্ড দেওয়া যাবে না কিংবা কারও সঙ্গে অনুরূপ ব্যবহার করা যাবে না।

আদালতে খাঁচা স্থাপনসংক্রান্ত বিধানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সম্পূরক আবেদনটি করা হয় বলে জানান আবেদনকারীদের আইনজীবী শিশির মনির। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রুলে ৮২ বিধি কেন সংবিধানের ৩৫(৫) অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আইন ও বিচার বিভাগের সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিবসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। দেশের কোন কোন আদালতের ভেতরে (অধস্তন আদালতের এজলাসকক্ষ) লোহার খাঁচা রয়েছে, সে-সংক্রান্ত প্রতিবেদন এখনো হাতে আসেনি।

রিট আবেদনকারী ১০ আইনজীবী হলেন জি এম মুজাহিদুর রহমান, মোহাম্মদ নোয়াব আলী, সাদ্দাম হোসেন, আব্দুল্লাহ সাদিক, মিজানুল হক, মুজাহিদুল ইসলাম, মেসবাহ উদ্দিন, মো. জোবায়দুল ইসলাম, আজিম উদ্দিন পাটোয়ারী ও সাজ্জাদ সারোয়ার।