বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি না হলেও যৌথ বাহিনীর অভিযানের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। তারা মনে করে, আওয়ামী লীগের শাসনামলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের যে ভয়াবহ সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করছে।

কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর হাতে আটক যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি আজ শনিবার গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠায়। সেখানেই এ কথা বলা হয়।

অভ্যুত্থানের ছয় মাস পরও সেনাবাহিনীর হাতে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা সরকারের ব্যর্থতার বহিঃপ্রকাশ বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। এমন অবস্থায় জনগণের জানমালের সুরক্ষা ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির পক্ষে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ তিন দফা দাবি উত্থাপন করেন। এগুলো হলো যৌথ বাহিনীর হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করা; সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা রদ করে সেনা ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া এবং ধর্ম–জাতি–লিঙ্গনির্বিশেষে দেশের সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

বিবৃতিতে বর্তমান সরকারের সময়ে বিচারবহির্ভূত কিছু ঘটনার অভিযোগ তুলে ধরা হয়। যেমন গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর গাইবান্ধায় ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগী সোহরাব হোসেন ও শরিফুল ইসলামকে যৌথ বাহিনী কর্তৃক আটকের পর পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ আসে। ১৬ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহে যুবদল নেতা সাইদুল ইসলাম যৌথ বাহিনীর হেফাজতে মারা যান। গত ৭ ডিসেম্বর ডাকাতির অভিযোগে আটক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হযরত আলীর মৃত্যুর কারণ হিসেবে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ এসেছে। চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলায় ছাত্রদলের সাবেক নেতা আবদুর রহমানও যৌথ বাহিনীর নির্যাতনে মারা গেছেন।

উল্লেখ্য, গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ২২ আগস্ট গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি গঠন করা হয়। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, লেখক, সাংবাদিক, শিল্পী, আইনজীবী, চিকিৎসকসহ সমাজের নানা পেশার শতাধিক ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত হয় এই কমিটি।