চবিতে হলের ফটকে তালা ঝোলালেন শিক্ষার্থীরা, খুললেন ২ ঘণ্টা পর

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

পানির সমস্যার সমাধান, খাবারের মান বাড়ানোসহ ছয় দফা দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের একটি হলের মূল ফটকে দুই ঘণ্টা তালা ঝুলিয়ে রাখেন শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার বেলা একটায় এ ঘটনা ঘটে। পরে বেলা তিনটার দিকে তালা খুলে দেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলে এ ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীরা তিন কার্যদিবসের মধ্যে হলের পানির সমস্যার সমাধান চান।

শিক্ষার্থীরা হল থেকে বালতি নিয়ে বের হয়ে এসে পানি চান। তাঁরা ‘খাবারের মান বৃদ্ধি, করতে হবে, করতে হবে’, ‘পানির সমস্যা সমাধান করতে হবে করতে হবে’, ‘আমাদের দাবি, আমাদের দাবি, মানতে হবে মানতে হবে’ বলে স্লোগান দেন। পরে বেলা তিনটায় হলের প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকের আশ্বাসে তাঁরা তালা খুলে দেন।

শিক্ষার্থীদের ছয় দাবি হলো পর্যাপ্ত পানির সরবরাহ নিশ্চিত করা ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা, হলের খাবারের মান বাড়ানো, পাঠাগার সংস্কার করা, নিয়মিত শৌচাগার পরিষ্কার ও সংস্কার করা, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতি বাড়ানো এবং হলের কক্ষ সংস্কার করা।
হলে থাকা শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী কাশিদুর তুষার প্রথম আলোকে বলেন, হলের বর্ধিত অংশে সাত দিন ধরে পানি নেই। পুরো হলে অর্ধেকের বেশি সময় পানি থাকে না। হল কর্তৃপক্ষকে বারবার জানালেও তারা ব্যবস্থা নেয়নি। তিনি আরও বলেন, পুরো হলে শিক্ষার্থী রয়েছেন এক হাজারেরও বেশি। কিন্তু সুপেয় পানির জন্য ফিল্টার রয়েছে মাত্র দুটি। এগুলোও বেশির ভাগ সময় বন্ধ থাকে।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রিপন প্রথম আলোকে বলেন, হলের কোনো নির্দিষ্ট পাঠাগার নেই, পত্রিকা পড়ার কক্ষকে পাঠাগার হিসাবে ব্যবহার করছেন। কিন্তু ওই কক্ষেও পর্যাপ্ত বৈদ্যুতিক পাখা নেই, লাইট নেই। আর হলের ডাইনিংয়ে যে খাবার দেওয়া হয়, তা মুখে নেওয়া যায় না। মোটকথা, এই হলে শিক্ষার্থীদের জন্য অনুকূল কোনো পরিবেশ নেই।

দর্শন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মেহেদী আশফাক প্রথম আলোকে বলেন, একটা হলের কক্ষের আসবাবপত্রও ঠিক নেই। ভাঙাচোরা টেবিল, চেয়ার ও আলমারিতে কোনোরকমে কাজ চালাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। শৌচাগারের দরজায় ফুটো, নিয়মিত পরিষ্কার না করার কারণে দুর্গন্ধ—এসবের মধ্যে শিক্ষার্থীরা থাকছেন। আর ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতি নেই বললেই চলে। তাই তাঁরা অতিষ্ঠ হয়ে আজ হলে তালা দিয়েছেন।

শাহ আমানত হলের প্রাধ্যক্ষ নির্মল কুমার সাহা প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীরা কখনো লিখিতভাবে কিছু জানাননি। মৌখিকভাবে কর্মচারীদের জানানো হয়েছে বললেও কর্মচারীরা তাঁকে কিছু বলেননি। তিনি এসব সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ শুরু করেছেন।