‘বিয়ন্ড দ্য হরাইজন’ প্রদর্শনী ঘুরে দেখছেন (বাঁ থেকে) এম এ মান্নান, জি এম খলিলুর রহমান ও মো. মনিরুজ্জামান। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গ্যালারি চিত্রকে
ছবি: অগ্নিলা আহমেদ

একটি নগরকে সুন্দর করতে নাগরিক সচেতনতা ও ইট–পাথরের স্থাপত্যের সঙ্গে প্রয়োজন শিল্পের নান্দনিক স্পর্শ। এই কাজ করে থাকেন শিল্পীরা। তাই চিত্রশিল্পীদের ছবিতে প্রকৃতি স্থান পেলে তা দর্শকের মনে প্রভাব রাখে। ‘বিয়ন্ড দ্য হরাইজন’ প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথিদের বক্তব্যে উঠে এসেছে এসব কথা।

বীর মুক্তিযোদ্ধা শিল্পী জি এম খলিলুর রহমানের আঁকা ছবি নিয়ে রাজধানীর ধানমন্ডির গ্যালারি চিত্রকে শুক্রবার বিকেলে শুরু হয়েছে তাঁর দ্বিতীয় একক প্রদর্শনী ‘বিয়ন্ড দ্য হরাইজন’। প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে চার দশক আগে জি এম খলিলুর রহমানের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হওয়ার স্মৃতিচারণা করেন মন্ত্রী। এ সময় তাঁর কথায় উঠে আসে প্রকৃতির ছবি যত সহজ বোঝা যায়, বিমূর্ত শিল্প সে তুলনায় অস্পষ্ট থাকার কথা।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, একটি নগর শুধু ইট–কাঠের স্থাপত্যে সুন্দর হয় না। প্রত্যেক নাগরিকের সচেতনতা প্রয়োজন। জি এম খলিলুর রহমানের আঁকা ছবিতে উঠে এসেছে বাংলাদেশের নদী, নৌকা, প্রকৃতির দৃশ্য, যা দর্শকের দেখে ভালো লাগবে।

প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে অ্যাক্রিলিক মাধ্যমে আঁকা বাংলার প্রকৃতি ও মুক্তিযুদ্ধনির্ভর ৩৫টি ছবি। ‘ঝরাপাতার গান’, ‘কাপ্তাই লেক’, ‘প্রতিবিম্ব’ অথবা ‘বীরাঙ্গনা’ শিরোনামের ছবিগুলোয় উঠে এসেছে বাংলাদেশের কথা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধা শিল্পী আবুল বারক আলভী তুলে ধরেন সত্তরের দশকে খলিলুর রহমানের চারুকলায় ভর্তি হওয়ার সময়ের কথা। শিক্ষকতার শুরুতেই তিনি ছাত্র হিসেবে পেয়েছিলেন খলিলুর রহমানকে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বরেণ্য ইমেরিটাস অধ্যাপক শিল্পী রফিকুন নবী। পরিকল্পনামন্ত্রীর বক্তব্যের বিমূর্ত শিল্পের প্রসঙ্গ টেনে রফিকুন নবী বলেন, বিমূর্ত শিল্প ভালো লাগলেই কাজটি সার্থক। এ সময় তিনি বলেন, টেলিভিশন চ্যানেলে কাজ করলে সাধারণত আঁকার অভ্যাস চলে যায় একজন শিল্পীর। কিন্তু খলিলুর রহমান ছবি আঁকা থেকে দূরে থাকেননি।

প্রদর্শনীর উদ্বোধনের আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি তুলে দেওয়া হয় পরিকল্পনামন্ত্রীর হাতে। ছবিটি এঁকেছেন শিল্পী খলিলুর রহমান। বাংলাদেশ টেলিভিশনের একসময়ের প্রধান শিল্প নির্দেশক খলিলুর রহমান বলেন, বাংলার চিরচেনা রূপের প্রতি যে বিস্ময়, তাই উঠে এসেছে তাঁর রংতুলিতে। তাই এ প্রদর্শনীর নাম ‘বিয়ন্ড দ্য হরাইজন’।

খলিলুর রহমানের প্রথম একক চিত্রকর্ম প্রদর্শনী হয় ২০১৯ সালে গ্যালারি চিত্রকে ‘বিউটি অব বাংলাদেশ’ নামে। এ ছাড়া দলগত অনেক প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন তিনি। ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে ‘বিয়ন্ড দ্য হরাইজন’ প্রদর্শনী।