খেজুরের কাঁচা রস খেয়ে ঢাকার হাসপাতালে একজনের মৃত্যু

গাছে বাঁধা খেজুরের রস সংগ্রহের হঁাড়িফাইল ছবি

খেজুরের কাঁচা রস খাওয়ায় নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। আজ রোববার রাজধানীর মহাখালীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, ওই ব্যক্তি একজন মধ্যবয়সী পুরুষ। রোগ তাত্ত্বিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, তিনি খেজুরের কাঁচা রস খেয়েছিলেন।

অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন আরও জানান, নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এটা এ বছর প্রথম মৃত্যুর ঘটনা। মারা যাওয়া ব্যক্তির বাড়ি মানিকগঞ্জে।

নিপাহ ভাইরাসের ঝুঁকি নিয়ে গত ১০ ডিসেম্বর আইইডিসিআর আয়োজিত এক সভায় জানানো হয়, বাংলাদেশে ২০০১ সাল থেকে ওই সময় (গত ১০ ডিসেম্বর) পর্যন্ত ৩৩৯ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে, যার মধ্যে ২৪০ জন রোগী মারা গেছেন।

দেশে ডিসেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। সাধারণত খেজুরের কাঁচা রস পানের মাধ্যমে এই ভাইরাস সংক্রমিত হয়।

আইইডিসিআরের ওই সভায় আরও জানানো হয়, ২০২৩ সালে (১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত হিসাব) নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ জন এবং তার মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন ১০ জন। রোগী অনুপাতে মৃত্যুহার ৭১ দশমিক ৪২ শতাংশ।

আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন সভাটিতে নিপাহ ভাইরাসের বিস্তার এবং ঝুঁকিবিষয়ক একটি তথ্যনির্ভর উপস্থাপনা তুলে ধরেন।

উপস্থাপনায় ওই অধ্যাপক জানান, নিপাহ ভাইরাস একটি মারাত্মক রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাস। এ ভাইরাসের বাহক টেরোপাস (ফল আহারী) গোত্রীয় বাদুড়। বাদুড় থেকে মানুষে এই রোগের সংক্রমণ হয়। মানুষের মধ্যে এ সংক্রমণ প্রথম শনাক্ত হয় মালয়েশিয়ায় ১৯৯৮ সালে।

তাহমিনা শিরীন বলেন, বাংলাদেশে ২০০১ সালে মেহেরপুর জেলায় নিপাহ ভাইরাসের প্রথম প্রাদুর্ভাব চিহ্নিত হয়। এর পর থেকে প্রায় প্রতিবছরই বাংলাদেশে এই রোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষ করা যাচ্ছে। এই ভাইরাস থেকে দূরে থাকতে হলে খেজুরের কাঁচা রস পান থেকে বিরত থাকতে হবে।