শখের টিভি কোথায় রাখি

খেলোয়াড়রা বিশ্বকাপে মাঠ কাঁপাতে প্রস্তুতি নেন দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের চর্চার মাধ্যমে। আর খেলাপ্রিয় মানুষেরা? বিশ্বকাপকে ঘিরে তাঁদের প্রস্তুতি কেমন হয়? ভাবছেন এটা আবার কেমন প্রশ্ন? দর্শকের আবার প্রস্তুতির কী আছে? খেলোয়াড় ছাড়াও খেলাপ্রিয় মানুষদেরও থাকে বিশ্বকাপকে ঘিরে নানা জল্পনাকল্পনা আর প্রস্তুতি। সেই প্রস্তুতির একটা ধাপ হলো নতুন টিভি কেনা। বিশ্বকাপের সময়টাতে যেন পরিবারের সবাই মিলে একসঙ্গে খেলা উপভোগ করতে পারেন, তাই এই সময়ে টিভি কেনার ধুম পড়ে যায়। আর ঘরে নতুন টিভি আসার সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের মনে প্রথম যে প্রশ্নটি উঁকি দেয়—শখের টিভি কোথায় রাখি?

নগরায়ণের এই সময়ে একদিকে কমে আসছে ঘরের আয়তন, অন্যদিকে টেলিভিশনের আকৃতিতেও এসেছে পরিবর্তন। মানুষ এখন বড় পর্দার টিভিকেই বেছে নিচ্ছে। আর ঘরের জায়গা বাঁচানোর জন্য দেয়ালেই স্থাপন করা হচ্ছে টিভি। রুমের জায়গা বাঁচানোর পাশাপাশি দেখার সুবিধার্থে ঘরের দেয়ালে টেলিভিশন স্থাপনের বিষয়টি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। দেয়ালে টিভি স্থাপনই এখন টিভি রাখার সবচেয়ে সুন্দর জায়গা—এমনটাই জানালেন রেডিয়েন্ট ইনস্টিটিউট অব ডিজাইনের অন্দরসজ্জাবিদ গুলশান নাসরীন চৌধুরী। কোথায় টিভি রাখবেন, কেমন করে রাখবেন—এসব বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

টিভি যখন বসার ঘরে

দেয়ালে টেলিভিশন রাখার জন্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সাধারণত বসার ঘরের দেয়ালটাকেই বেছে নেওয়া হয়। যে স্থান থেকে টিভি দেখতে কারও কোনো অসুবিধা হবে না, ঘরের এমন কোনো দেয়াল বেছে নিতে হবে। এরপর দেয়ালের ঠিক মাঝ বরাবর টিভি বসাতে হবে। এ ক্ষেত্রে দৃষ্টি থেকে কতটুকু দূরত্বে টেলিভিশন স্থাপন করবেন, তা সম্পূর্ণই নির্ভর করবে টিভির আয়তনের ওপর। দেয়ালে মাঝ বরাবর টিভি বসানোর পর বাকি দেয়ালটুকু দেখা যায় ফাঁকা পড়ে থাকে। তাই এর চারপাশে নান্দনিক নকশার তাক বসাতে পারেন। আয়তাকার, বর্গাকার বা ত্রিভুজাকৃতি তাকে নানা রকম জ্যামিতিক নকশার প্রয়োগের সঙ্গে সঙ্গে ইংরেজি বর্ণমালার বিভিন্ন বর্ণের (এ, ই, এল ইত্যাদি) আকৃতির তাকও বানিয়ে নিতে পারেন। তাকের ফাঁকে ফাঁকে সুন্দর করে সাজাতে পারেন পছন্দের শোপিস। এই শোপিস যেন বেশি পরিমাণে না থাকে, তাহলে টিভি দেখার সময় সেটা বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। টেলিভিশনের মনিটর অনেক বড় হলে দেয়ালজুড়ে তাক না বসানোই ভালো। এ ক্ষেত্রে মনিটরের নিচে মেঝে থেকে ছয় ইঞ্চি বরাবর ফাঁকা রেখে মনের মতো তাক বানাতে পারেন। ইচ্ছে হলে টেলিভিশনের পেছনের দেয়ালে বসিয়ে দিতে পারেন পছন্দসই ওয়ালপেপার। দেয়ালে লাগানোর পর টেলিভিশনের তারগুলো যাতে ঘরের সৌর্ন্দযে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, সে–জন্য মনিটরের নিচ বরাবর দেয়াল থেকে ছয় ইঞ্চি দূরত্বে ওয়ালপেপার লাগানো আরেকটি পারটেক্স বোর্ড বসিয়ে দিতে পারেন। এতে করে তারগুলো আর চোখের সামনে থাকবে না।

টিভি যখন শোবার ঘরে

অনেকেই শোবার ঘরে টিভি রাখতে পছন্দ করেন—আয়েশ করে টিভি দেখার জন্য। শোবার ঘরে টিভি রাখার ক্ষেত্রে বিছানার সামনের দেয়ালটিই বেশি উপযুক্ত। বিছানার উচ্চতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে টিভির উচ্চতা নির্ধারণ করতে হবে। শোবার ঘরে ফার্নিচার তুলনামূলক বেশি থাকে। তাই দেয়াল খালি পাওয়া মুশকিল। তেমন হলে দেয়ালজোড়া কেবিনেট তৈরি করে কেবিনেটের মাঝের অংশে টিভি–ইউনিট বানাতে পারেন। একটি দেয়ালেই কেবিনেট, আলমারি ও এলসিডি ইউনিট—সব তৈরি করা যাবে। একটি দেয়াল খালি থাকলে সেখানে পছন্দমতো টিভি–ইউনিট ডিজাইন করা সম্ভব। দেয়ালে মনিটর ঝুলিয়ে তার চারপাশে নিজেদের পছন্দমতো শোপিস রাখতে পারেন।