বঙ্গোপসাগরে অস্ত্রসহ ৩০ জলদস্যু গ্রেপ্তার

বঙ্গোপসাগরে থাকা বিভিন্ন ট্রলারে ডাকাতির অভিযোগে অস্ত্রসহ ৩০ জলদস্যুকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাবছবি: র‌্যাবের সৌজন্যে

প্রথম দল সাগরে ডাকাতির জন্য স্থান ও ট্রলার চিহ্নিত করে ডাকাত সদস্যের একত্র করত। দ্বিতীয় দল ডাকাতি করার জন্য অস্ত্র, বোট, জাল ও আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম সরবরাহ করত। এরপর একযোগে সাগরে বিভিন্ন ট্রলারে লুটপাট ও ডাকাতি করত। লুটপাটের মালামাল বাজারে বিক্রি করত তৃতীয় দল। বরিশাল, ভোলা, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের সমুদ্র উপকূলে এভাবেই ডাকাতি করে আসছিল ৩৫ থেকে ৪০ সদস্যের জলদস্যু দল।

আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে একত্র হয়ে ১৫–২০টি ট্রলারে ডাকাতির পরিকল্পনা করছিল দলটি। এমন খবর পেয়ে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে ৪৮ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে ৩টি দলের দলনেতাসহ মোট ৩০ জলদস্যুকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-৭। এ সময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দুটি ট্রলার, পাঁচটি কার্তুজ ও আটটি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাব জানায়, জেলে সেজে সমুদ্রে দস্যুতা, ডাকাতি ও অন্যান্য জেলেদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করত করিম মাঝি (৩৩), ইউসুফ মাঝি (২৯) ও শাহেদ মাঝির (২২) নেতৃত্বাধীন তিনটি ডাকাত দল। গত রোববার থেকে গতকাল সোমবার সকাল পর্যন্ত চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র উপকূল থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকায় সমুদ্রে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা সবাই চট্টগ্রামের আনোয়ারা, কক্সবাজারের কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও ভোলা জেলার বাসিন্দা।

গতকাল সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামের ১৫ নম্বর ফিশারিঘাট এলাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-৭-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব আলম। তিনি বলেন, ২০১৮ ও ২০২২ সালে জলদস্যুরা আত্মসমর্পণ করলেও নতুন সদস্য সংগ্রহ করে সমুদ্রে ডাকাতি চালিয়ে আসছিলেন তথাকথিত গডফাদাররা। তথাকথিত এসব গডফাদাররা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকেন।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব আলম বলেন, ডাকাত সর্দার ইউসুফ মাঝি ও করিম মাঝির নিজস্ব বোট ও কোম্পানি রয়েছে, যা দিয়ে তাঁরা মাঝির ছদ্মবেশে সমুদ্রে দস্যুতা কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। আসামি ইউসুফ মাঝি ছিলেন ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী। তাঁর দলের কাজ ছিল ডাকাতির জন্য অন্যান্যদের একত্র করা। এ ছাড়া শাহেদ মাঝির দলের কাজ ছিল ডাকাতি করার জন্য অস্ত্র, বোট, জাল ও আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম সরবরাহ করা। করিম মাঝির দলের কাজ ছিল লুট করা মালামাল সুবিধামতো স্থানে বিক্রয় করে টাকা সদস্যদের ভাগ করে দেওয়া।

র‍্যাব জানায়, গ্রেপ্তার আসামিরা বাঁশখালী, কুতুবদিয়া, চকরিয়া, পেকুয়া ও মহেশখালী এলাকায় সংঘবদ্ধ জলদস্যুতার ঘটনায় জড়িত ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তাঁদের নামে বিভিন্ন থানায় অসংখ্য মামলা রয়েছে। পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থার জন্য তাঁদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।