চট্টগ্রামে গৃহ কর নিয়ে আন্দোলন: মুখোমুখি সুরক্ষা পরিষদ ও মেয়র সমর্থকেরা

চট্টগ্রাম নগরে চট্টগ্রাম সচেতন নাগরিক সমাজ নামের একটি সংগঠনের মানববন্ধন
ছবি: জুয়েল শীল

বর্ধিত গৃহ কর বাতিলের দাবিতে চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদের নগর ভবন ঘেরাও কর্মসূচি প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে চট্টগ্রাম সচেতন নাগরিক সমাজ নামের একটি সংগঠন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

চট্টগ্রাম সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে এ সমাবেশের আয়োজন করা হলেও আয়োজকেরা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর সমর্থক। কাল বুধবার বেলা ১১টায় নগর ভবন ঘেরাও কর্মসূচি দিয়েছে চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদ। গত সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে এই ঘোষণা দেন পরিষদের নেতারা। এরপরই হঠাৎ করে ‘বিএনপি–জামায়াতের মদদপুষ্ট কর সুরক্ষা আন্দোলনের নামে চট্টগ্রামের উন্নয়নে বাধা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রতিবাদে’ এই বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করে চট্টগ্রাম সচেতন নাগরিক সমাজ।

সমাবেশে সমাপনী বক্তব্যে সাবেক ছাত্রনেতা ওসমান গণি বলেন, চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদ শান্ত নগরকে অশান্ত করতে সুদূরপ্রসারী নীলনকশা করছে। এ জন্য একের পর এক কর্মসূচি পালন করছে। চট্টগ্রাম সিটি মেয়র যাতে সুন্দরভাবে নগরের উন্নয়ন করতে না পারে, সে জন্য বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। এবার তারা নগর ভবন ঘেরাও করার কর্মসূচি দিয়েছে। কিন্তু তা প্রতিহত করা হবে। সচেতন নাগরিক সমাজের নেতা-কর্মীরা নগর ভবনের আশপাশে অবস্থান নেবেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, করদাতা সুরক্ষা পরিষদ বিএনপি-জামায়াতের সমর্থনপুষ্ট। তারা বিএনপি-জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য মাঠে নেমেছে। তাদের এলাকায় এলাকায় প্রতিহত করা হবে।

সমাবেশে বাকলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. সেলিম, ১৭ নম্বর ইউনিট আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. হারুন, চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সহসভাপতি ইয়াসির আরাফাত, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক উপশিক্ষা ও পাঠচক্রবিষয়ক সম্পাদক ইলিয়াস উদ্দিনসহ ছাত্রলীগের থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন। বিকেল চারটার পর থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে আসতে থাকেন তাঁরা। এতে যান চলাচল ব্যাহত হয়। সমাবেশ শেষে প্রেসক্লাবের সামনে থেকে একটি মিছিল বের করা হয়। তা বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়।  

বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে জানতে চাইলে করদাতা সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি নুরুল আবসার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বাবা আবুল খায়ের আমৃত্যু চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন। তিনি থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। শুধু তা–ই নয়, সুরক্ষা পরিষদের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাঁরা নগরবাসীর স্বার্থে আন্দোলন করছেন। এই আন্দোলন নিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাঁদের নামে বিএনপি-জামায়াতের অপবাদ দেওয়া হচ্ছে, তা দুঃখজনক।

নুরুল আবসার দাবি করেন, সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী তাঁর এলাকার লোকজনদের দিয়ে এই কর্মসূচি করিয়েছেন।

তবে তা অস্বীকার করেছেন অন্যতম আয়োজক ছাত্রলীগ নেতা মো. ইলিয়াস। তিনি দাবি করেন, তাঁরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই কর্মসূচি পালন করেছেন।