তথ্য কমিশনের শুনানিকক্ষে ঢুকতে দেওয়া হয়নি সাংবাদিকদের

তথ্য কমিশনছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে তথ্য কমিশনের শুনানিতে নিজের বক্তব্য জানাতে এসেছিলেন শেরপুরের নকলা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন। এ জন্য সেখানে সংবাদ সংগ্রহে যান বিভিন্ন গণমাধ্যমের ১৫ জনের মতো কর্মী। তবে সাংবাদিকদের শুনানি কক্ষে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পরে শুনানি শেষে সাংবাদিকদের ই–মেইলে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে জানানো হয়, ইউএনওর বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে তথ্য কমিশন।

গত ৭ মার্চ নকলা ইউএনও কার্যালয়ে তথ্য চাইতে যাওয়া দৈনিক দেশ রূপান্তরের এক প্রতিনিধিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) ওই আদালত পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছিলেন ইউএনও। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার পরপরই অনুসন্ধানে নামে তথ্য কমিশন। আজ মঙ্গলবার ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিনকে তাঁর বক্তব্য জানাতে তথ্য কমিশনে ডাকা হয়।

শুনানিতে অংশ নিতে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তথ্য কমিশনের শুনানিকক্ষে ঢোকেন ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিন। এ সময় গণমাধ্যম কর্মীরা তাঁর সঙ্গে শুনানিকক্ষে যেতে চাইলে সেখানে কর্তব্যরত অফিস সহায়কেরা বাধা দেন। এর মধ্যেই সেখানে উপস্থিত হওয়া তথ্য কমিশনের কর্মীরা বিষয়টি নিয়ে জনসংযোগ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

এরপর গণমাধ্যমকর্মীরা জনসংযোগ কর্মকর্তা লিটন কুমার প্রামাণিকের কক্ষে যান। তখন তিনি জানান, বিষয়টি তাঁর আওতাবহির্ভূত। আগের কোনো শুনানিতে তিনি সাংবাদিকদের এভাবে আসতে দেখেননি। তিনি বলেন, এজলাসে যেতে হলে তথ্য কমিশনারদের পক্ষ থেকে অনুমতি নিয়ে আসতে হবে।

পরে শুনানি শেষে এ বিষয়টি নিয়ে নিজ কার্যালয়ে ওই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তথ্য কমিশনার শহিদুল ইসলাম। তিনি নকলার ওই ঘটনায় তথ্য কমিশনের করা অনুসন্ধান কমিটির তদন্ত কর্মকর্তাও। সাংবাদিকদের শুনানিকক্ষে ঢুকতে না দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, তাঁরা বেলা ১১টা থেকে অন্য শুনানির জন্য শুনানিকক্ষে ছিলেন। আর শুনানিতে সাংবাদিকদের উপস্থিতির বিষয়টিতে তাঁরা এখনো অভ্যস্ত হয়ে ওঠেনি। সামনের দিনগুলোতে বিষয়টি কীভাবে সুন্দর করা যায়, কমিশন সেদিকে নজর দেবে।

শুনানি শেষে ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিন সাংবাদিকদের বলেন, তিনি নকলার ওই সাংবাদিকদের সঙ্গে বেআইনি কিছু করেননি। ওই সাংবাদিক তথ্য চাইতে গিয়ে নথি নিয়ে টানাটানি করেছেন এবং তাঁর দপ্তরের একজন নারী কর্মীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন। এ বিষয়ে তিনি তথ্য কমিশনের নিজের বক্তব্য পেশ করেছেন।  

বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ
বেলা দুইটার পর তথ্য কমিশন থেকে ই–মেইলে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ অনুযায়ী তথ্য সরবরাহে সহযোগিতা না করে তথ্য অধিকার আইনের প্রয়োগকে বাধাগ্রস্ত করায় ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে তথ্য কমিশন।