‘আমার যখন ক্যানসার হলো, তখন সবাই আমার সঙ্গে এমন আচরণ করছিলেন যেন আমি কিছুদিনের মধ্যেই মারা যাব। কেউ কেউ জিজ্ঞেস করছিলেন যে আমার কোন কোন খাবার খেতে ইচ্ছা করছে, যেন তিনি আমার জন্য শেষ খাবার তৈরি করে নিয়ে আসছেন’, বলছিলেন নাসরিন হোসেন। ক্যানসার জয়ের পর ৯ বছরের বেশি সময় ধরে ক্যানসারমুক্ত জীবন যাপন করছেন তিনি।
গত শুক্রবার ঢাকার আমিন বাজারের একটি রিসোর্টে নতুন সংগঠন ‘ক্যানসার পেশেন্ট সাপোর্ট অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন’–এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নিজের গল্প তুলে ধরেন ব্যাংক কর্মকর্তা নাসরিন। এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ক্যানসার রোগী এবং তাঁদের সেবকদের কল্যাণে কাজ করার লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করল ক্যানসার পেশেন্ট সাপোর্ট অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন।
ওই অনুষ্ঠানে সমাজের বিভিন্ন অংশ থেকে আসা ক্যানসারজয়ী এবং তাঁদের স্বজনেরা শোনান ক্যানসার নিয়ে বেঁচে থাকা এবং ক্যানসার জয়ের গল্প। তেমনই একজন আসমা হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমার ব্রেস্ট ক্যানসারের জন্য কেমোথেরাপি চলছিল, একই সঙ্গে আমার স্বামীর ফুসফুস ক্যানসারের জন্য চলছিল রেডিওথেরাপি। আমি কেমোথেরাপি নিয়ে আধ ঘণ্টাও বিশ্রাম নিতে পারিনি। স্বামীর সেবা, তাঁর খাবার ও ওষুধের ব্যবস্থা করতে হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই কঠিন সময় আমি পাড়ি দিয়েছি সৃষ্টিকর্তার ওপর বিশ্বাস এবং আমার অদম্য মনোবলকে সঙ্গে নিয়ে। আমি জানি ক্যানসার রোগী এবং তাঁর স্বজনদের একটু অনুপ্রেরণা তাঁদের জীবনে বিরাট পরিবর্তন এনে দিতে পারে।’
অনুষ্ঠানের শুরুতেই সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা এবং বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অনকোলোজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক জাফর মো. মাসুদ বলেন, ‘এটি একটি সম্পূর্ণ অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, যার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থান করছেন ক্যানসার রোগী, তাঁদের সেবক এবং ক্যানসারজয়ীরা। আমাদের উদ্দেশ্য তাঁদের সঠিক তথ্য প্রদান, সচেতনতা বৃদ্ধি, শিক্ষামূলক কর্মসূচি এবং চিকিৎসা সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করা।’
সংগঠনটির সহসভাপতি অধ্যাপক জোহরা জামিলা খান, সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক মো. শাহনেওয়াজ খান, সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে ক্যানসার পেশেন্ট সাপোর্ট অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের লোগো উন্মোচন করা হয়।