যুক্ত হলো নতুন হজ প্যাকেজ, কমল উড়োজাহাজ ভাড়া
আগামী বছরের জন্য হজের নতুন প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার। এতে সরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি প্যাকেজ বাড়িয়ে তিনটি করা হয়েছে। এ ছাড়া উড়োজাহাজ ভাড়া আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১৩ হাজার টাকা কমছে। তবে স্বাস্থ্যবিমার টাকার পরিমাণ বাড়ছে।
আজ রোববার সচিবালয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ২০২৬ সালের হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেন ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, সরকারি ব্যবস্থাপনায় নতুন একটি প্যাকেজ করা করা হয়েছে; যেখানে ন্যূনতম খরচ ৪ লাখ ৬৭ হাজার ১৬৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া আগামী বছরের জন্য উড়োজাহাজ ভাড়া ১২ হাজার ৯৯০ টাকা কমছে। তিনি বলেন, গত বছর বিমান ভাড়া ছিল ১ লাখ ৬৭ হাজার ৮২০ টাকা। এ বছর বিমান ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮৩০ টাকা।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আগামী বছর হজ পালনের জন্য আগ্রহীদের প্রাথমিক নিবন্ধন শুরু হয় গত ২৭ জুলাই। আগামী ১২ অক্টোবর প্রাথমিক নিবন্ধন শেষ হচ্ছে। সাড়ে তিন লাখ টাকা জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন করা যাবে। আগামী বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ পালন করতে পারবেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, এ বছর সরকারি মাধ্যমে ‘হজ প্যাকেজ-১ (বিশেষ)’, ‘হজ প্যাকেজ-২’ ও ‘হজ প্যাকেজ-৩’ শিরোনামে মোট তিনটি প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্যাকেজ–১–এর আওতায় হজযাত্রীদের মক্কায় হারাম শরিফের বহিরাঙ্গন থেকে সর্বোচ্চ ৭০০ মিটারের মধ্যে এবং মদিনায় মার কাজিয়া বা সেন্ট্রাল এরিয়ায় আবাসন সুবিধা দেওয়া হবে। এ প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ১০ হাজার ৫৯৭ টাকা।
আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্যাকেজ মূল্যের পুরো অর্থ আবশ্যিকভাবে জমা দিতে হবে। ৯ নভেম্বর হজ চুক্তি; আগামী বছরের ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাড়িভাড়া ও পরিবহন চুক্তি করতে হবে। ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে হজ ভিসা ইস্যুর কার্যক্রম শুরু হবে।
খালিদ হোসেন বলেন, হজ প্যাকেজ-২ কিছুটা সুলভ। এই প্যাকেজের হজযাত্রীদের মক্কায় হারাম শরিফের বহিরাঙ্গন থেকে ১ দশমিক ২ কিলোমিটার থেকে ১ দশমিক ৮ কিলোমিটারের মধ্যে এবং মার কাজিয়া বা সেন্ট্রাল এরিয়ায় আবাসন সুবিধা দেওয়া হবে। এ প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৮৮১ টাকা।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, হজ প্যাকেজ-৩ একটি সাশ্রয়ী প্যাকেজ। এই প্যাকেজের হজযাত্রীদের আবাসন হবে মক্কায় আজিজিয়া এলাকায় এবং মদিনায় মার কাজিয়া এলাকার বাইরে। এ প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৬৭ হাজার ১৬৭ টাকা।
উপদেষ্টা বলেন, হজ প্যাকেজ-৩ সরকারি মাধ্যমে হজযাত্রীদের জন্য নতুন সংযোজন। এর আগে কখনো সরকারি মাধ্যমের হাজিদের আজিজিয়া এলাকায় আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়নি। তবে সর্বোচ্চ হজযাত্রী প্রেরণকারী তিনটি দেশ ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান ও মালয়েশিয়ার হজযাত্রীদের অনেক আগ থেকে আজিজিয়া এলাকাতেই রাখা হয়।
আগামী বছর হজে সৌদি সরকার স্বাস্থ্যবিমার পরিমাণ বাড়িয়েছে ১৩০ সৌদি রিয়াল বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪ হাজার ২৭০ টাকা।
ধর্ম উপদেষ্টা জানান, হজ এজেন্সিগুলোর জন্য ‘বেসরকারি মাধ্যমের সাধারণ হজ প্যাকেজ’ শিরোনামে একটি প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে। এই প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ১ হাজার ১৮৫ টাকা। সরকার অনুমোদিত এ প্যাকেজ নিয়ে এজেন্সিগুলো অতিরিক্ত দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে।
খালিদ হোসেন বলেন, প্রত্যেক হজযাত্রীর খাবার বাবদ প্রতিদিন ন্যূনতম ৩৫ সৌদি রিয়াল ব্যয় হতে পারে। এ হিসাব অনুসারে খাবারের জন্য প্রয়োজনীয় টাকা হজযাত্রীদের সঙ্গে নিতে হবে এবং নিজ দায়িত্বে খাবার কিনতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মিনা ও আরাফায় তাঁবু ভাড়া ৪ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। নুসুক মাসার প্ল্যাটফর্মে ‘দমে শোকর (কোরবানি)’ বাবদ ৭২০ সৌদি রিয়াল তথা ২৩ হাজার ৬৫২ টাকা জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ বছর প্রথমবারের মতো দমে শোকর বাবদ টাকা হজ প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত করে প্যাকেজ ঘোষণা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ২৬ মে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী বছর ১২ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সের শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ ব্যক্তি হজে যেতে পারবেন।
আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্যাকেজ মূল্যের পুরো অর্থ আবশ্যিকভাবে জমা দিতে হবে। ৯ নভেম্বর হজ চুক্তি; আগামী বছরের ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাড়িভাড়া ও পরিবহন চুক্তি করতে হবে। ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে হজ ভিসা ইস্যুর কার্যক্রম শুরু হবে। ১৮ এপ্রিল থেকে শুরু হবে হজ ফ্লাইট।