ট্যানারির বর্জ্যে হুমকির মুখে ধলেশ্বরীর জীববৈচিত্র্য

ধলেশ্বরী নদী, হেমায়েতপুর, সাভার, ঢাকা
ফাইল ছবি

দূষণের কারণে ধলেশ্বরী নদীর জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। এখন এই নদীর পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে অনেক কম। মূলত সাভারে স্থানান্তরিত চামড়া শিল্পনগরের (ট্যানারি) বর্জ্যের কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

আজ রোববার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে পরিবেশ অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে। দূষণের দায়ে ট্যানারিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দুই বছর ধরে নানা সুপারিশ করে আসছে সংসদীয় কমিটি। ট্যানারি বন্ধ রাখার সুপারিশও করেছিল কমিটি। তবে তাদের এসব সুপারিশ বাস্তবায়িত হয়নি। এ অবস্থায় গতকাল সংসদীয় কমিটি যেসব ট্যানারির বর্জ্য পরিশোধনব্যবস্থা নেই, প্রয়োজনে তাদের বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সুপারিশ করেছে।

জাতীয় সংসদ ভবনে বৈঠক শেষে সংসদীয় কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, সাধারণত মাছসহ জলজ প্রাণীর বসবাসের জন্য পানিতে যে পরিমাণ দ্রবীভূত অক্সিজেন প্রয়োজন, তার চেয়ে অনেক কম রয়েছে ধলেশ্বরীর পানিতে। জলজ প্রাণী ও জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকারক রাসায়নিক ক্রোমিয়াম রয়েছে সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। ফলে ধলেশ্বরী নদী এখন মাছসহ জলজ প্রাণীর জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সাবের হোসেন চৌধুরী জানান, শিল্প মন্ত্রণালয় আগামী তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়ানো ও ক্রোমিয়ামের মাত্রা কমিয়ে আনার চেষ্টা করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কমিটি বলেছে, ব্যর্থ হলে এর জন্য দায়ী ট্যানারিগুলোয় প্রয়োজনে বিদ্যুৎ–সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হবে।

কমিটির সভাপতি বলেন, দুই বছর ধরে তাঁরা পাঁচ-ছয়টি সুপারিশ করেছেন। কিন্তু শিল্প মন্ত্রণালয় একটিও বাস্তবায়ন করেনি। তারা শুধু বলে করছি, করব, ভবিষ্যতে করব। এটা হবে না। এখন কমিটি একটি চূড়ান্ত অবস্থানে যাচ্ছে।

কক্সবাজারে সংরক্ষিত বনের জায়গায় একটি আবাসিক প্রশিক্ষণ একাডেমি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। এ নিয়ে বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করে সংসদীয় কমিটি। বৈঠক শেষে সাবের হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, সব উন্নয়নকাজে বনের জমি দিয়ে দিলে বনই থাকবে না।

সাবের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, জাফর আলম, রেজাউল করিম, খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন ও শাহীন চাকলাদার অংশ নেন।