এক দিনে ডেঙ্গুতে তিনজনের মৃত্যু

ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের মশারির ভেতর রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এক দিনে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ৬১ জন ডেঙ্গুতে প্রাণ হারায়। তাদের মধ্যে ঢাকায় মারা গেছে ২৯ জন। ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় মারা গেছে ৩২ জন।

সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ৫২৫ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সবশেষ ডেঙ্গু পরিস্থিতির তথ্য অনুযায়ী, নতুন রোগীদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৩৫২ জন এবং দেশের অন্যান্য জেলার হাসপাতালে ১৭৩ জন ভর্তি হয়েছে।

গত সেপ্টেম্বরেই দেশে ৯ হাজার ৯১১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে ৩৪ জন। সব মিলিয়ে গত জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত (৩ সেপ্টেম্বর) দেশে ১৭ হাজার ৮২০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছে ১৫ হাজার ৬১৫ জন।

এ বছর দেশের ৫০টি জেলাতেই ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার বাইরে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলা কক্সবাজারে। এই জেলায় এ পর্যন্ত ১ হাজার ২৪৪ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে।

বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ২ হাজার ১৪৪ ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে ঢাকার ৫০টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে ১ হাজার ৫৯৮ জন। দেশের বিভিন্ন সরকারি জেলা ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে ৫৪৬ জন।

দুই দশকের বেশি সময় ধরে ডেঙ্গু বাংলাদেশে বড় ধরনের জনস্বাস্থ্য সমস্যা। ২০০০ সালের পর থেকে প্রতিবছর বহু মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে, এতে মৃত্যুও হচ্ছে। করোনা মহামারি শুরুর বছর ২০২০ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা কম ছিল। কিন্তু গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৮ হাজার ৪২৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়। এর মধ্যে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়।

করোনা মহামারি শুরুর আগে ২০১৯ সালে এক লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিল। চলতি বছরও বহু মানুষ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।

প্রতিবছরের মতো এ বছর বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখা রাজধানীতে মশা জরিপ করেছিল। জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছিল, গত বছরের চেয়ে এ বছর একই সময়ে রাজধানীতে এডিস মশার লার্ভা বেশি দেখা গেছে। এরপর কীটতত্ত্ববিদ ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলেছিলেন, এ বছর বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি হওয়ার ঝুঁকি আছে। তাঁরা এ-ও বলেছিলেন যে বৃষ্টি যদি থেমে থেমে হয় অর্থাৎ এক দিন বৃষ্টির পর কয়েক দিন হলো না, আবার এক দিন হলো, তাহলে মশা বাড়বে।