সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সঙ্গে এক দিন

আমড়া টাওয়ার শিখন কেন্দ্র পরিদর্শন করলেন ইউনিসেফ ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিলের সদস্য ও আঞ্জুমান অ্যান্ড আজিজ চ্যারিটেবল ট্রাস্টের (এএসিটি) চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান (মাঝে) ও ট্রাস্টি আজিজা আজিজ খান (বাঁয়ে ফুল হাতে)। গতকাল কামরাঙ্গীরচরের ঝাউচরে
শুভ্র কান্তি দাশ

কামরাঙ্গীরচরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের ঝাউচর বাজার থেকে ৪০০ মিটার দক্ষিণে আমড়া টাওয়ার গলি। এ গলির ভেতরে টিনের ছাউনির ঘরে সাজানা আমড়া টাওয়ার শিখন কেন্দ্র। এখানে প্রভাতি ও দিবা শাখায় সুবিধাবঞ্চিত ও ঝরেপড়া ৩০ শিশু পড়াশোনা করে। 

এই কেন্দ্রের মতো ইউনিসেফের ‘অ্যাবিলিটি বেজড অ্যাকসিলারেটেড লার্নিং সেন্টার’ প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৬৭টি শিখন কেন্দ্রে ২ হাজার শিশু পড়ালেখা করছে। কর্মসূচিটির উদ্দেশ্য, সমাজের সুবিধাবঞ্চিত, ঝরেপড়া এবং যে শিশুরা একেবারেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যায়নি, তাদের শিখন ও পঠনের মাধ্যমে মূলস্রোতে নিয়ে আসা। 

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে আমড়া টাওয়ার শিখন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন ইউনিসেফ ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিলের সদস্য ও আঞ্জুমান অ্যান্ড আজিজ চ্যারিটেবল ট্রাস্টের (এএসিটি) চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান ও ট্রাস্টি আজিজা আজিজ খান। সঙ্গে ছিলেন আজিজ খানের নাতনি আমানা আজিজ খন্দকার। 

আজিজ খান সুসজ্জিত শ্রেণিকক্ষটিতে গেলে শিক্ষার্থীরা তাঁকে অভ্যর্থনা জানায়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ছড়া ও কবিতা পড়ে এবং গান গেয়ে শোনায় তাঁকে। 

শিক্ষার্থী ফারুক (ছদ্মনাম) কবি কুসুমকুমারী দাশের ‘আদর্শ ছেলে’ কবিতাটি আবৃত্তি করে শোনায়। আরিফ (ছদ্মনাম) আবৃত্তি করে কবি জসিমউদ্‌দীনের ‘মামার বাড়ি’ কবিতা। এ সময় আজিজ খান বলেন, ‘আমার বাড়িও ফরিদপুর। আমিও ছেলেবেলায় পড়েছি, “আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা ফুল তুলিতে যাই।’’’ পুরো সময় শিশুরা আজিজ খানের সঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠে। আর এএসিটির পক্ষ থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয় জ্যামিতি বক্স উপহার। 

আজিজ খান কথা বলেন কয়েকজন অভিভাবকেরও সঙ্গে। তাঁদের উদ্দেশে তিনি বলেন, শিশুরাই ভবিষ্যৎ। লেখাপড়ার মাধ্যমে তাদের গড়ে তুলতে হবে। শিখন কেন্দ্র দেখে মনে হলো, শিশুরা মনের আনন্দে পড়ছে, শিখছে। শিশু অধিকার রক্ষায় ইউনিসেফ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। যাঁরা বয়স্ক তাঁদের জন্যও শিখন কেন্দ্র করা যেতে পারে। 

বিকেলে আমড়া টাওয়ার শিখন কেন্দ্র থেকে বের হন মুহাম্মদ আজিজ খান। তখন তাঁর সঙ্গে সম্মিলিত কণ্ঠে শিক্ষার্থীরা গায়, ‘আমরা করব জয় একদিন।’