ফিলিস্তিনে যুদ্ধাপরাধে দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদফাইল ছবি: প্রথম আলো

ফিলিস্তিনের নিরপরাধ জনগণের ওপর ইসরায়েলের আগ্রাসনের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। গাম্বিয়ার বানজুলে ওআইসির ১৫তম শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তৃতায় তিনি এই প্রতিবাদ জানান।

স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় বানজুলের স্যার দাওদা কাইরাবা জাওয়ারা আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ওআইসির উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি ফিলিস্তিনে চলমান ইসরায়েলের আগ্রাসনের অবিলম্বে অবসান, দুর্দশাগ্রস্তের জন্য নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তা প্রবেশ নিশ্চিত করা এবং যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনের জন্য দায়ী ইসরায়েলকে জবাবদিহির আওতায় আনতে ওআইসি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।

ফিলিস্তিনে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি ও শাস্তি নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে গাজায় চলমান সংকট সমাধান সম্ভব বলে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

হাছান মাহমুদ তাঁর বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুদূরপ্রসারী পররাষ্ট্রনীতি ও প্রজ্ঞায় মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক স্থাপন ও উন্নয়নের কথা বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি সদস্যপদ লাভের পর থেকেই ওআইসির বিভিন্ন উদ্যোগে বাংলাদেশের সক্রিয় ভূমিকার কথা তুলে ধরেন।

হাছান মাহমুদ আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলা দায়ের করার জন্য গাম্বিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান ও সুষ্ঠুভাবে মামলা পরিচালনার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য ওআইসি সদস্যরাষ্ট্রগুলোকে অনুরোধ জানান।

এবারের ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে গাম্বিয়া সৌদি আরবের কাছ থেকে সভাপতিত্ব গ্রহণ করে। উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তৃতায় ওআইসির মহাসচিব হিসেইন ব্রাহিম তাহা মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

মালয়েশিয়া, ব্রুনেই দারুসসালাম, আজারবাইজানের সঙ্গে বৈঠক

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ শনিবার মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী উতামা হাজি মোহামদ বিন হাজির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক আরও জোরদার করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তাঁরা। এ ছাড়া বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অধিকতর সহযোগিতার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে এ দিন ব্রুনেই দারুসসালামের পররাষ্ট্রবিষয়ক সেকেন্ড মিনিস্টার সেইতা হাজি এরউইন বিন পেহিন দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। সাক্ষাৎকালে হাছান মাহমুদ বাংলাদেশের সঙ্গে ব্রুনেই দারুসসালামের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্পর্ক আরও জোরদারের আহ্বান জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে আজারবাইজানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেইহুন বাইরামভ সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে দুই দেশের ব্যবসায়ী সংগঠনের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। আজারবাইজান থেকে জ্বালানি আমদানির সম্ভাবনা নিয়েও উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আলোচনা করেন।