আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতিপর্বের উদ্বোধন করে শিল্পী রফিকুন নবী বললেন, ‘সারা বছর ধরে যে চেতনার কথা বলা হয়, পয়লা বৈশাখ আমাদের সেই চেতনাকে উদ্দীপ্ত করে। এ উৎসবের সঙ্গে রাজনীতি, অর্থনীতি ও ঐতিহ্য অনেক কিছুই জড়িয়ে আছে। প্রস্তুতিপর্বের মধ্য দিয়েই মূলত বাংলা বর্ষবরণের উৎসব শুরু হয়ে গেল। বাঙালি বললেই প্রথমে পাখি, মাছ, নদীর কথা মনে পড়ে। তাই পাখি আঁকা হলো আজ। তবে ক্যানভাসের লাল রংটা হচ্ছে উৎসবের আভাস। অনেকবার এ উৎসবের উদ্বোধন করেছি। প্রতিবারই সেই প্রথম শুরুর আনন্দ ফিরে পাই।’    

চারুকলা অনুষদের ডিন শিল্পী নিসার হোসেন জানালেন, কয়েক দিনের মধ্যেই নির্ধারণ করা হবে এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য। সে অনুযায়ী কাজ শুরু করবেন শিক্ষার্থীরা। তবে রোববার থেকে শুরু হলো এ জন্য অর্থ সংগ্রহের কাজ। চারুকলার শিক্ষার্থীরা জলরং-অ্যাক্রেলিক চিত্র, সরাচিত্র ও মুখোশের পাশাপাশি নানা হস্তশিল্প তৈরি করবেন। এসব বিক্রির অর্থ থেকে হবে শোভাযাত্রার আয়োজন।

২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশের মঙ্গল শোভাযাত্রা ইউনেসকোর ‘অস্পর্শনীয় শিল্পের’ তালিকাভুক্ত হয়। সরকারের পক্ষ থেকে এ আয়োজনে সম্পৃক্ততা থাকলেও চারুকলার শিক্ষার্থীরা চান নিজেদের মতো শিল্পকর্ম তৈরি করে সেসব বিক্রির মাধ্যমে আয়োজন করতে।

চারুকলার ডিন নিসার হোসেন জানালেন, এর ফলে শিল্প ও শিল্পীর সঙ্গে মানুষের সম্পৃক্ততা তৈরি হয়। রমজানের মধ্যে বাংলা নববর্ষ হলে আয়োজনের  আকারে কিছুটা পরিবর্তন আনতে হয়। এবার শোভাযাত্রা চারুকলার সামনে থেকে শুরু করে ঢাকা ক্লাব হয়ে, শিশুপার্ক ঘুরে আবার চারুকলার সামনে পৌঁছে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

রোববার দুপুরে বর্ষবরণের প্রস্তুতিপর্বের উদ্বোধনে সবাইকে মুড়ি-মুড়কি-খই-বাতাসা দিয়ে মিষ্টিমুখ করান শিক্ষার্থীরা। এ সময় ঢোলের বাদ্য শুরু হলে তার তালে তালে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে তাঁরা।