খাল ভরাট ও মিলেনিয়াম সিটি প্রকল্পের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা

হাইকোর্ট ভবনফাইল ছবি

ঢাকার কেরানীগঞ্জের টোটাইল খাল, ওই খালসংলগ্ন নিচু কৃষিজমি ও জলাশয়ে মাটি ভরাট ও অননুমোদিত ‘মিলেনিয়াম সিটি’ আবাসন প্রকল্পের সব কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার রুলসহ এ আদেশ দেন।

একই সঙ্গে আদালত ওই খাল, খালসংলগ্ন নিচু কৃষিজমি–জলাশয়ের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ও আবাসন প্রকল্পের মাটি ভরাটের ফলে খালের ক্ষতি নিরূপণ করে আদালতে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। টোটাইল মৌজায় অবস্থিত জলাশয়, বন্যাপ্রবাহ অঞ্চল ও নিচু কৃষিজমির শ্রেণি পরিবর্তন প্রতিরোধ বিষয়ে ব্যবস্থা জানিয়েও প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও ঢাকার জেলার জেলা প্রশাসকের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

টোটাইল খাল যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও ওই প্রকল্পের অবৈধ কার্যক্রম বন্ধে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন ওই রিট করে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধূরী, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এস হাসানুল বান্না। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আযাদ সরকার।

রিট আবেদনকারী পক্ষ জানায়, ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলার তারানগর ইউনিয়নের টোটাইল মৌজায় প্রায় ১০ একর আয়তনের জলাশয়টি স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘টোটাইল বিল’ নামে। বিলটি সিএস ১ ও ১০ দাগে খাল হিসেবে রেকর্ডভুক্ত। উল্লিখিত মৌজাগুলো জলাভূমি হিসেবে চিহ্নিত। কিন্তু আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য নির্বিচারে খালের জলাশয় ও সংলগ্ন কৃষি উপযোগী নিচু জমি ভরাট করা হচ্ছে। মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেড আবাসন প্রকল্পের নামে খাল ভরাট, কোম্পানির সাইনবোর্ডসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট কোনো কর্তৃপক্ষের বৈধ অনুমোদন ছাড়াই মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেডের ‘মিলেনিয়াম সিটি’ প্রকল্পের কার্যক্রম চলছে।

বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় জলাভূমি হিসেবে চিহ্নিত ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন এবং জলাশয় মাটি বা বালু দিয়ে ভরাট করে উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণের সুযোগ নেই বলে জানায় রিট আবেদনকারী পক্ষ। তাদের ভাষ্য, আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ করা ও পরিবেশগত ছাড়পত্র নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আইনি এই বাধ্যবাধকতা না মেনে কোনো ধরনের অনুমোদন ও পরিবেশগত ছাড়পত্র গ্রহণ ছাড়াই খাল, জলাশয় ও নিচু কৃষিজমি ভরাট করে মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেড আবাসন প্রকল্পের কাজ অব্যাহত রাখায় ওই রিট করা হয়।