সরকারি চাকরিতে নিয়োগে জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক চায় ইসি
সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যান্য কাগজপত্রের সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বাধ্যতামূলক করার অনুরোধ জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি জনপ্রশাসন সংশ্লিষ্ট আইনি কাঠামোর মধ্যেও বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার পক্ষে মত দিয়েছে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগ।
মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি) এস এম হুমায়ুন কবীর এ তথ্য জানান।
এর আগে সোমবার বিকেলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ ২৭টি মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন। বৈঠকে এনআইডি বাধ্যতামূলক করার পক্ষে আটটি যুক্তি তুলে ধরা হয়। এরপর হুমায়ুন কবীর সংবাদ সম্মেলনে বৈঠকের বিস্তারিত তুলে ধরেন।
হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘আমরা যাঁদের এনআইডি সংশোধন করে থাকি, তাঁদের মধ্যে বিরাট একটি অংশ সরকারি চাকরিজীবী। আগে তাঁরা ভাউচারের মাধ্যমে বেতন পেতেন। কিন্তু এখন আইবাসের মাধ্যমে এনআইডির ভিত্তিতে বেতন হয়। এটা তাঁদের রুটি-রুজি, বেতন-ভাতা, সন্তানাদিদের ভরণ-পোষণ ইত্যাদির সঙ্গে জড়িত। আইবাসে বেতন হওয়ার জন্য এনআইডি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।’
হুমায়ুন কবীর আরও বলেন, ‘কোনো কোনো অফিস এনআইডি ঠিক না হলে বেতন চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে বলেছে। তখন তাঁরা আইবাসে যান, আইবাস থেকে তাঁদের জানানো হয়, তাদের কিছু করার নেই। তখন তাঁরা আমাদের কাছে আসেন। আমাদের অফিসে এলেও অনেক সময় সরাসরি সংশোধন করা যায় না। অনেক সময় নিষ্কৃতিও দেওয়া যায় না। ছয় মাস ধরে এ ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি।’
হুমায়ুন কবীর আরও বলেন, ‘চাকরিতে যাঁরা এনআইডিকে গুরুত্ব দেননি, তাঁদের চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট দপ্তর-সংস্থাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেহেতু এখনো জনপ্রশাসনের আইনি কাঠামোর মধ্যে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয়নি, হয়তো এ কারণে তা উপেক্ষিত হয়েছে। আইনি কাঠামোর মধ্যে এলে আর এমন ভুল হবে না। আমরা চাই সব সংস্থা ভবিষ্যতে নিয়োগে জাতীয় পরিচয়পত্রকে বাধ্যতামূলক হিসেবে মানুক।’
হুমায়ুন কবীর বলেন, যেসব সরকারি চাকরিজীবীর বেতন ও ভাতা আটকে আছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন দ্রুত সংশোধন করে বেতন-ভাতার ব্যবস্থা করে। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছেন সংশ্লিষ্টরা।
এনআইডির মহাপরিচালক বলেন, ‘সরকারি চাকরিজীবীদের জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের কাজ করার জন্য আমরা আলাদা আরেকটি সেল করেছি। তাঁরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আবেদন পর্যালোচনা করে যাঁদেরটা সহজে দেওয়া যায়, সেগুলো আমরা সংশোধন করে দিই। যেগুলো করা যায় না, সেগুলোর ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করি।’