তাপমাত্রা আরও বাড়বে, সতর্কবার্তা জারি

বাসা বদলের জন্য ঘরের আসবাবপত্র পিকআপ ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়ার পথে পড়েছেন যানজটে। তখন তীব্র রোদ থেকে রক্ষা পেতে কেউ ছাতা মাথায় কেউবা আবার গামছা জড়িয়ে নিয়েছেন সারা শরীরে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর এলাকায়, নারায়ণগঞ্জ, ৩ এপ্রিলছবিঃ দিনার মাহমুদ।

ঢাকাসহ দেশের চার বিভাগের ওপর দিয়ে তিন দিন ধরে বইছে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে এসব এলাকায় আগামী দু–তিন দিন তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। তাই এসব এলাকায় তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা বা হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বুধবার অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদের স্বাক্ষর করা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ সতকর্বাতা জারি করা হয়। সেখানে বলা হয়, ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া চলমান তাপপ্রবাহ পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে। আশপাশের এলাকাকায় এটি আরও বিস্তৃত হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, তাপমাত্রা যদি ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়, তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলে। ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বলা হয়। তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয় যখন তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে। আর অতি তীব্র হয় ৪২ ডিগ্রি বা এর বেশি হলে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, ৮ ও ৯ এপ্রিল তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসার সম্ভাবনা আছে। সামান্য বৃষ্টি হতে পারে।

আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, এখন যে তাপ তাতে সাধারণ ছিটেফোঁটা বৃষ্টিতে গরম কমবে না। এর জন্য ভারী বৃষ্টির দরকার। তার সম্ভাবনা খুব বেশি নেই।

বুধবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গা ও ঈশ্বরদীতে ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

গরমে স্বস্তি পেতে যা করবেন

এই গরমে কিছুটা স্বস্তি পেতে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তাঁরা মনে করেন, অপ্রয়োজনে বাইরে বের না হওয়াই ভালো। সরাসরি সূর্যের আলো পড়ে, এমন জায়গায় না থাকা। বের হলে ছায়াযুক্ত স্থানে চলাফেরা করতে হবে। ঘরে-বাইরে আরামদায়ক পোশাক পরতে হবে।

২ এপ্রিল ঢাকা জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেদিন এ প্রসঙ্গে ল্যাবএইডের ওয়েলনেস সেন্টারের পুষ্টিবিদ ফাহমিদা হাশেমের সঙ্গে প্রথম আলোর কথা হয়েছিল। তিনি কিছু পরামর্শ দিয়ে বলেছিলেন, একজন নারীকে দিনে দুই থেকে আড়াই লিটার ও পুরুষদের আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হবে। এখন যেহেতু রমজান মাস, তাই ইফতারের পর থেকে সাহ্‌রি পর্যন্ত সময়টিতে পানি পান করতে হবে।

প্রচণ্ড গরমে অনেক সময় শরীরের ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্য হারিয়ে যায়। তাই ডাবের পানি, আখের গুড়, লবণ ও লেবু দিয়ে ঘরে তৈরি শরবত ও স্যালাইন পান করতে হবে। অনেক সময় খাবার হজমেও সমস্যা হয়, পেট গরম হয়ে যায়। তাই বেলের শরবত, তরমুজের শরবত, টক দই দিয়ে মাঠা বা লাবাং তৈরি করে খাওয়া যায়। তবে কোনো শরবতেই অতিরিক্ত চিনি বা লবণ না দেওয়া। সাদা পানিকে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে।

এ ছাড়া শরীরে পানি ধরে রাখে এমন কিছু খাবারের ওপর জোর দেন ওই পুষ্টিবিদ। যেমন ইসবগুল, চিয়া সিডস, তোকমাদানা, তরমুজ, নাশপাতি। আর সাহ্‌রিতে লাউ, চিচিঙ্গা, ঝিঙে, পেঁপে, চালকুমড়া, পটোল, ধুন্দুল বা শসা দিয়ে হালকা মসলায় পাতলা ঝোলের তরকারি।