প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের ওপর হামলার নিন্দা বিসিএসএনএর
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়েছে উত্তর আমেরিকায় অবস্থানরত বাংলাদেশি যোগাযোগবিদদের সংগঠন বাংলাদেশি কমিউনিকেশন স্কলার্স ইন নর্থ আমেরিকা (বিসিএসএনএ)। গতকাল সংগঠনটির এক বিবৃতিতে বলা হয়, দুটি প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, সাংবাদিক ও কর্মীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও নিউ এজ-এর সম্পাদক নুরুল কবিরকে হেনস্তার ঘটনা বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর এক গুরুতর আঘাত।
বিবৃতিতে বলা হয়, এগুলো বিচ্ছিন্ন কোনো প্রতিবাদ ছিল না বরং সমন্বিত হামলা, যার উদ্দেশ্য ছিল ভয় ও ধ্বংসের মাধ্যমে স্বাধীন সাংবাদিকতাকে স্তব্ধ করা এবং যা মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।
বিসিএসএনএর বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যোগাযোগ, গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতার গবেষক হিসেবে আমরা বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য দীর্ঘ ও কঠিন সংগ্রামের ইতিহাস সম্পর্কে সচেতন। দেশের গণমাধ্যম ইতিহাস নথিবদ্ধ করা, প্রান্তিক কণ্ঠস্বরকে তুলে ধরা এবং জনপরিসরে বিতর্ককে উসকে দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। কয়েক দশক ধরে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের মতো গণমাধ্যম অনুসন্ধানী প্রতিবেদন, সম্পাদকীয় স্বাধীনতা ও জনপরিসরের জন্য অপরিহার্য পেশাগত মানদণ্ডে অবদান রেখে আসছে। তাদের লক্ষ্য করে আঘাত করা মানে নাগরিকদের জানার সামষ্টিক অধিকারের ওপর আঘাত হানা। পরিহাসের বিষয় হলো, যে উন্মত্ত জনতা দুটি পেশাদার গণমাধ্যমে ক্ষতি সাধন করেছে, সেগুলোই ছিল পতিত হাসিনা শাসনের, একটি স্বৈরতন্ত্রের, বিরুদ্ধে সোচ্চার; যে শাসন এক দশক ধরে একই কাজ করার চেষ্টা করেছিল। এ ধরনের নৃশংসতা জুলাইয়ের যে চেতনার প্রতিনিধিত্বের দাবি ভাঙচুরকারীরা করে, তার অর্জনকেই ধ্বংস করে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সাংবাদিক ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের জন্য সময়মতো সুরক্ষা নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের দৃশ্যমান ব্যর্থতা এবং জরুরি সেবা কার্যক্রমে বাধা দেওয়ার প্রতিবেদনে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা করা এবং যারা তা চর্চা করেন তাদের সুরক্ষা দেওয়া রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব। এর মধ্যে সহিংসতা প্রতিরোধ, হুমকিতে দ্রুত সাড়া দেওয়া, সাংবাদিক ও কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনা অন্তর্ভুক্ত। সংবাদমাধ্যমের ওপর হামলায় দায়মুক্তি কেবল আরও সহিংসতাকেই আমন্ত্রণ জানায়।
বিবৃতিতে কর্তৃপক্ষকে ঘটনার দ্রুত, স্বাধীন ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত পরিচালনা করার আহ্বান জানানো হয়। একইসঙ্গে পরিকল্পনা, উসকানি ও বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িত সকল দায়ীদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনোর আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিদাতারা হলেন ফাহমিদুল হক, বার্ড কলেজ, আনিস রহমান, ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন, মো. খাদিমুল ইসলাম, ইস্টার্ন নিউ মেক্সিকো ইউনিভার্সিটি, মোহাম্মদ রশিদ, ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন মিসিসিপি, দাউদ ইসা, পয়েন্ট পার্ক ইউনিভার্সিটি, খাইরুল ইসলাম, ফ্লোরিডা আটলান্টিক ইউনিভার্সিটি, জামাল উদ্দিন, কর্নেল ইউনিভার্সিটি, নূর ই. মকবুল, ইউনিভার্সিটি অব আলাবামা ইন হান্টসভিল, নাজমা আখতার, নাজারেথ ইউনিভার্সিটি, এম. ডি. আশরাফুল গনি, স্টনি ব্রুক ইউনিভার্সিটি, জাহেদ আরমান, মিসিসিপি স্টেট ইউনিভার্সিটি, আহমেদ শাতিল আলম, ইউনিভার্সিটি অব ওকলাহোমা, মীর ফজলা রাব্বী, ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট অস্টিন, শেরিন ফারহানা মনি, নিকোলস স্টেট ইউনিভার্সিটি, মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, ওয়েন স্টেট ইউনিভার্সিটি, কাজী মেহেদী হাসান, সাউদার্ন ইলিনয় ইউনিভার্সিটি, মীর হাসিব, ইউনিভার্সিটি অব আলাবামা, মানজুর মাসউদ, ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন–ম্যাডিসন, হাসান ফয়সাল, ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন মিসিসিপি, প্রিয়াঙ্কা কুন্ডু, ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয় শিকাগো, মামুনর রশিদ, ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডো বোল্ডার, মাহবুবুল হক ভূঁইয়া, ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটা টুইন সিটিজ, সাজ্জাদ মাহমুদ শুভ, ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটি, জেনিফার কামাল নোভা, সাউদার্ন ইলিনয় ইউনিভার্সিটি কার্বন্ডেল, এইচ. এম. এম. মুরতুজা, ইউনিভার্সিটি অব ওকলাহোমা, মো. আজাদ, ওয়েন স্টেট ইউনিভার্সিটি, শাহ জাহান শুভ, ইউনিভার্সিটি অব আলাবামা, মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, ইউনিভার্সিটি অব উটাহ, ছোটন দেব নাথ, ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন–মিলওয়াকি, মাহেদী হাসান, টেক্সাস টেক ইউনিভার্সিটি, শায়না ফারহিন, ফ্লোরিডা আটলান্টিক ইউনিভার্সিটি, বেলাল মুনতাসির, ইউনিভার্সিটি অব কানসাস ও মো. সুমন আলী, ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন–মিলওয়াকি।