‘কৃষিজমি সুরক্ষা ও ব্যবহার আইন’ দ্রুত পাস করতে সংসদকে পরামর্শ হাইকোর্টের

হাইকোর্ট ভবনফাইল ছবি

ফসলি জমিতে পুকুর খননে বিধিনিষেধ আরোপ করে ‘কৃষিজমি সুরক্ষা ও ব্যবহার আইন, ২০১৬’ খসড়া আইন প্রণয়ন করা হলেও কোনো এক অজানা কারণে এটি এখনো আলোর মুখ দেখছে না বলে এক রায়ে উল্লেখ করেছেন হাইকোর্ট। রায়ে আদালত বলেছেন, বাংলাদেশের কৃষিজমি, বনভূমি, টিলা, পাহাড় ইত্যাদি সুরক্ষার জন্য আইনটি দ্রুত জাতীয় সংসদ কর্তৃক পাস হওয়া অতি আবশ্যক।

‘মো. মিজানুর রহমান বনাম বাংলাদেশ সরকার ও অন্যান্য’ শীর্ষক মামলার (রিট আবেদন) রায়ে এমন পর্যবেক্ষণসহ জাতীয় সংসদের প্রতি দুটি পরামর্শ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০২২ সালের ২ জুন ওই রায় দেন। ১৫ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ১৬ এপ্রিল প্রকাশ করা হয়।

পরামর্শে আদালত বলেছেন, ‘কৃষিজমি সুরক্ষা ও ব্যবহার আইন, ২০১৬’ অতিদ্রুত আইন আকারে পাস করার জন্য জাতীয় সংসদকে পরামর্শ প্রদান করা হলো। জাপান ও ফিনল্যান্ডের প্রণীত আইন যতটুকু সম্ভব অনুসরণ ও সমন্বয় করে আমাদের দেশের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি “দ্বীপ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ” নামে একটি পৃথক কর্তৃপক্ষ গঠনের জন্য “দ্বীপ উন্নয়ন আইন” দ্রুত প্রণয়নের জন্য জাতীয় সংসদকে পরামর্শ প্রদান করা হলো।’

নথিপত্র থেকে জানা যায়, নওগাঁর মান্দা উপজেলার চককানুর বাসিন্দা মো. মিজানুর রহমানকে ২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি উপজেলার মান্দা-কুশুম্বা ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে একটি নোটিশ দেওয়া হয়। এতে ২০১০ সালের মাটি ও বালু ব্যবস্থাপনা আইন না মেনে ও কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া মিজানুরকে তাঁর পুকুর খনন বন্ধ করতে বলা হয়। এ অবস্থায় নিজ জমিতে পুকুর খননের জন্য অনুমতি চেয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক বরাবর ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আবেদন করেন মিজানুর। এ আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়ায় হাইকোর্টে রিট করেন তিনি। রিটের শুনানি নিয়ে প্রথমে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ ও পরে রুল দেন হাইকোর্ট। এর মধ্যে পুকুর খননের অনুমতি চেয়ে মিজানুরের করা আবেদনটি বিবেচনার সুযোগ নেই বলে উল্লেখ করে নওগাঁর জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব শাখা) কার্যালয় থেকে ২০১৯ সালের ১৬ এপ্রিল চিঠি দেওয়া হয়। এই চিঠি ‘আইনগত কর্তৃত্ব ব্যতিরেকে’ করা হয়েছে উল্লেখ করে রায়ে এটি বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।

আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এস এম বজলুর রশিদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আশেক মোমিন, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল লাকী বেগম ও ফেরদৌসি আক্তার।