প্রকল্প পরিচালকের ওপর হামলায় ‘নেতৃত্বদানকারী’ ঠিকাদারের রিমান্ড মঞ্জুর

নিজ কার্যালয়ে হামলার শিকার হন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. গোলাম ইয়াজদানী
ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) আড়াই হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালকের ওপর হামলা-মারধরের মামলায় গ্রেপ্তার এ ঘটনায় ‘নেতৃত্বদানকারী’ এক ঠিকাদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

এই ঠিকাদারের নাম মো. সাহাবুদ্দিন। আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলাম শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। গত সোমবার রাতে নগরের খুলশী বাঘগোনা এলাকা থেকে সাহাবুদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, আসামি সাহাবুদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

প্রকল্প পরিচালক গোলাম ইয়াজদানীকে মারধরের ঘটনায় গত ২৯ জানুয়ারি সিটি করপোরেশনের নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. কামাল উদ্দিন বাদী হয়ে খুলশী থানায় মামলা করেন। মামলায় আসামি হিসেবে ১০ ঠিকাদারের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৫ থেকে ১০ জনকে।

জানা গেছে, হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া সাহাবুদ্দিন বিএনপির সমর্থক। তাঁর সঙ্গে ছিলেন চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সাবেক পাঠাগার সম্পাদক সঞ্জয় ভৌমিক ও আওয়ামী লীগের সমর্থক ফেরদৌস, সুভাষ ও হাবিব।

চসিকের সবচেয়ে বড় প্রকল্পের পরিচালকের দায়িত্বে আছেন গোলাম ইয়াজদানী। আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতায় বিমানবন্দর সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প গত বছরের ৪ জানুয়ারি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে একই বছরের ১৪ আগস্ট স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম ইয়াজদানীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ না পেয়ে গত ২৯ জানুয়ারি বিকেলে একদল ঠিকাদার প্রকল্প পরিচালকের কক্ষে ঢুকে তাঁকে মারধর করেন। এ সময় তাঁর টেবিলের কাচ ও নামফলক ভেঙে ফেলা হয়। সিটি করপোরেশনের সাম্প্রতিক ইতিহাসে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি বলে করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানিয়েছেন।

জানা গেছে, হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া সাহাবুদ্দিন বিএনপির সমর্থক। তাঁর সঙ্গে ছিলেন চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সাবেক পাঠাগার সম্পাদক সঞ্জয় ভৌমিক ও আওয়ামী লীগের সমর্থক ফেরদৌস, সুভাষ ও হাবিব।

মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন এস জে ট্রেডার্সের সাহাবুদ্দিন, শাহ আমানত ট্রেডার্সের সঞ্জয় ভৌমিক, মাসুদ এন্টারপ্রাইজের মো. ফেরদৌস, শাহ আমানত ট্রেডার্সের সুভাষ দে, মেসার্স খান করপোরেশনের হাবিব উল্ল্যাহ খান, মেসার্স নাজিম অ্যান্ড ব্রাদার্সের মো. নাজিম, মেসার্স রাকিব এন্টারপ্রাইজের মো. ফিরোজ, মো. ফরহাদ, ইফতেখার অ্যান্ড ব্রাদার্সের মো. ইউসুফ ও জ্যোতি এন্টারপ্রাইজের আশীষ।
এই মামলায় পুলিশ মোট পাঁচ ঠিকাদারকে গ্রেপ্তার করেছে।