দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা তরুণের লাশ মিলল পুকুরে

লাশ
প্রতীকী ছবি

জুবায়ের আহমদ (১৮) বেশ কিছুদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। লোকজনকে নানাভাবে উৎপাত করতেন। এ কারণে স্বজনেরা তাঁকে দড়ি দিয়ে বেঁধে আটকে রাখতেন। এ অবস্থায় দুই দিন ধরে তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। বৃহস্পতিবার পাশের এলাকার একটি মাদ্রাসার পুকুরে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। পরে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। ঘটনাটি ঘটেছে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায়।

জুবায়ের উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের টাট্রিউলি গ্রামের বাসিন্দা জমির আলীর ছেলে। এ ব্যাপারে কুলাউড়া থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জুবায়ের মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ায় বাড়ির বাইরে বেরিয়ে প্রায়ই লোকজনকে ভয়ভীতি দেখাতেন। এমন পরিস্থিতিতে স্বজনেরা তাঁর হাতে দড়ি দিয়ে ঘরের খুঁটিতে বেঁধে রাখতেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর দেখা যায়, দড়ি ছেঁড়া অবস্থায় পড়ে আছে। আশপাশের বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান মেলেনি। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার সকালের দিকে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে বুধপাশা ইবতেদায়ি মাদ্রাসার পুকুরে লাশ ভাসতে দেখেন শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে স্বজনেরা ছুটে গিয়ে লাশটি জুবায়েরের বলে শনাক্ত করেন। বেলা একটার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার বিকেলে কুলাউড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অপু কুমার দাসগুপ্ত মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, লাশ উদ্ধারের সময় জুবায়েরের এক হাতে দড়ির ছেঁড়া অংশ বাঁধা দেখা গেছে। তবে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় তাঁর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। কোনোভাবে পুকুরে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে তাঁরা ধারণা করছেন। স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।

কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহিবুল ইসলাম আজাদ বলেন, জুবায়েরের বাবা দিনমজুরি করে সংসার চালান। পরিবারে তাঁর মা ও আরেক ভাইও মানসিক ভারসাম্যহীন। এর মধ্যে জুবায়ের বেশি পাগলাটে স্বভাবের ছিলেন। অর্থাভাবে তাঁদের সুচিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি। পরিবারটি সম্পর্কে আগে তাঁর বিস্তারিত জানা ছিল না। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ওই পরিবারকে সহযোগিতা করা হবে।

সিলেট এম জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাঈদ এনাম মুঠোফোনে বলেন, কোনো ব্যক্তির মধ্যে অস্বাভাবিক আচার-আচরণ দেখা দিলে তাঁকে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের কাছে নিয়ে চিকিৎসা করানো দরকার। এ ব্যাপারে অভিভাবকদের সচেতন হওয়া উচিত।