পাঁচ কেন্দ্রে বেলা ২টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৮ থেকে ৯ শতাংশ

গুলশানের মানারাত ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল স্কুল কেন্দ্রে ভোটারের সারি দেখা যায়নি। বেলা ২ টা ২০ মিনিটে তোলা ছবি। ঢাকা, ৭ জানুয়ারিছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

রাজধানীর গুলশানের মানারাত ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের পুরুষ ও নারী কেন্দ্রে মোট ভোটার ৪ হাজার ৯২০ জন। বেলা ২টা পর্যন্ত নারী কেন্দ্রে ১৪০ ও পুরুষ কেন্দ্রে ২৬২টি, অর্থাৎ ৪০২টি ভোট পড়েছে। যা মোট ভোটারের তুলনায় ভোট পড়ার হার মাত্র ৮ শতাংশ।

আজ রোববার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ওই কেন্দ্রে বেলা আড়াইটায় গিয়ে দেখা যায়, ভোটার উপস্থিতি প্রায় নেই বললে চলে। মাঝেমধ্যে একেকজন এসে ভোট দিয়ে যাচ্ছেন। কাউকে লাইনে দাঁড়ানোর প্রয়োজন হচ্ছে না।

ওই কেন্দ্রে চিকিৎসক জান্নাতুল ফেরদৌস বেলা আড়াইটায় ভোট দেন। তিনি জানান, এই সময়ে এত কম ভোটার ভোট দেবেন, তা তিনি আশা করেননি। তিনি জানান, তাঁর স্বামী ও ছেলে ভোট দিয়েছেন।

নারী কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. জসিমউদ্দিন এবং পুরুষ কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. রকিবুল ইসলাম বলেন, উচ্চবিত্ত এলাকার লোকজন সকাল সকাল ভোট দিতে আসেন না। তাঁরা দেরিতে শেষবেলায় ভোট দিতে আসবেন।

এ কেন্দ্রে নৌকা ছাড়া আর কোনো প্রার্থীর এজেন্ট ছিলেন না। উচ্চবিত্ত এলাকা বলে পরিচিত আরেকটি ভোটকেন্দ্র বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজে দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত অবস্থান করে দেখা যায়, ভোটার উপস্থিতি কম। সেখানকার ৭টি কেন্দ্রের মধ্যে ৬৮ নম্বর পুরুষ কেন্দ্রে বেলা ২টা পর্যন্ত ভোট পড়েছিল ২২৮টি। ওই কেন্দ্রের পুরুষ ভোটার ২ হাজার ৪৮৭ জন। অর্থাৎ ভোট শেষ হওয়ার ২ ঘণ্টা আগে ভোট পড়েছে ৯ শতাংশ। দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৬৮ নম্বর কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ১৩২টি।

এ কে এম জাওয়াদুর (বাঁয়ে) স্বজনদের নিয়ে বিএএফ শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভোট দিতে আসেন। বিকেল তিনটার ছবি। ঢাকা, ৭ জানুয়ারি
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভোট দিতে এসেছিলেন আমিনুল এহসান। তিনি বলেন, ভোট দেওয়ার হার তাঁর কাছে খুব কম মনে হয়েছে। কেন্দ্র প্রায় ফাঁকা।

রফিকুল ইসলাম নামের এক ভোটার বলেন, যতটুকু ফাঁকা দেখা যাচ্ছে, তার চেয়ে কেন্দ্র ফাঁকা হবে বলে তিনি ভেবেছিলেন। নৌকা ছাড়া কোনো শক্ত প্রার্থী না থাকায় ভোটের ফলাফল নিয়ে কারও আগ্রহ নেই। তানিয়া খান নামের এক নারী ভোটার বলেন, ভোট একপেশে হচ্ছে।

আখতার মতিন চৌধুরী ও জিয়াউদ্দিন আহমেদ খান বলেন, নাগরিক অধিকার ও দায়িত্ব থেকে ভোট দেওয়া উচিত। কে ভোট বর্জন করল, তা দেখার দরকার নেই। একই মত প্রকাশ করেন সাবিনা ইয়াসমিন নামের এক ভোটার।

বিএএফ শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সাংবাদিকদের প্রবেশের ক্ষেত্রে বেশ কড়াকড়ি ছিল। নির্বাচন কমিশন থেকে দায়িত্ব পালনের অনুমতি দেওয়া কার্ড থাকলেও নিরাপত্তাকর্মীরা সরাসরি ঢুকতে দিচ্ছিলেন না। প্রিসাইডিং কমর্কর্তা এসে অনুমতি দেওয়ার পর ভেতরে যাওয়া যায়। সেখানে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তেমন ভোটারের উপস্থিতি ছিল না। এখানে ৩ হাজার ৩৭৮ জন ভোটারের মধ্যে ৩০০টির মতো ভোট পড়েছে বলে জানান প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক।

ওই কেন্দ্রে নৌকা ছাড়া আর কোনো প্রার্থীর এজেন্ট ছিলেন না। মো. শরীফ খান নামের নৌকার একজন এজেন্ট বলেন, ‘অন্য প্রার্থীর কোনো এজেন্টই আসেননি। এরপর শুনব তাঁরা বলবে, আমরা বসতে দিইনি।’

ওই কেন্দ্রগুলো ঢাকা–১৭ আসনের। এ আসনে প্রার্থী সাতজন। তাঁদের মধ্যে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাত নৌকা প্রতীকে ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রার্থী মো. আইনুল হক কুলা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর বাকি পাঁচজন হচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। এর মধ্যে বেলুন প্রতীক নিয়ে আরাফাত আশওয়াদ ইসলাম, টেলিভিশন প্রতীকে এস এম আবুল কালাম আজাদ, সোনালী আঁশ প্রতীকে কাজী শফিউল বাশার, আম প্রতীক নিয়ে মো. গোলাম ফারুক মজনু এবং দোতারা প্রতীকে শাহ আলম নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।