মাতারবাড়ীর টার্মিনাল নির্মাণকাজ শুরু এ বছর

ছবি: প্রথম আলো

কক্সবাজারের মহেশখালীতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর মাতারবাড়ীর টার্মিনাল নির্মাণের কাজ এ বছর শুরু হতে পারে। আর মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত হওয়ার পর আগামী অক্টোবরের মধ্যে প্রস্তাবিত বে-টার্মিনাল প্রকল্পের মূল কাজ শুরু হবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল আজ মঙ্গলবার দুপুরে বন্দর ভবনের সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান।

গত মে মাসে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দেন মোহাম্মদ সোহায়েল। এরপর আজ প্রথম সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বন্দরের বর্তমান অবস্থা ও চলমান প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি তুলে ধরেন তিনি।

চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে বড় প্রকল্প মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের টার্মিনাল নির্মাণের অগ্রগতি তুলে ধরে চেয়ারম্যান বলেন, টার্মিনালটির নির্মাণকাজের ঠিকাদার নিয়োগের দরপত্র মূল্যায়নের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। কার্যাদেশ দেওয়ার পরই নির্মাণকাজ শুরু হবে। ২০২৬ সালে টার্মিনাল চালু হবে। এই টার্মিনালে কনটেইনারবাহী বড় জাহাজ ভিড়তে পারবে।

২০২০ সালের মার্চে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেকে) অনুমোদিত হয়। এর মধ্যে প্রায় ১২ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে জাপান। আর সরকার ২ হাজার ৬৭১ কোটি টাকা এবং চট্টগ্রাম বন্দর ২ হাজার ২১৩ কোটি টাকার জোগান দিচ্ছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের প্রস্তাবিত বে-টার্মিনাল নিয়েও কথা বলেন বন্দর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, বে-টার্মিনালের মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত হবে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি। এটি চূড়ান্ত হলে অক্টোবর মাসে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে। এই প্রকল্পে কনটেইনার ও পণ্য ওঠানো-নামানোর তিনটি টার্মিনাল হবে।

বন্দরের চলমান ও প্রস্তাবিত প্রকল্পে বিদেশিদের বিনিয়োগের আগ্রহের কথা উল্লেখ করে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, অনেক দেশই বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরকে কেন্দ্র করে আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরে পাঁচ থেকে সাত বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হতে পারে। যত বেশি বিনিয়োগ হবে তত কর্মসংস্থান হবে। প্রযুক্তি বিনিময় হবে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও বাড়বে।

টার্মিনাল পরিচালনার বিষয়ে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের দেশীয় অপারেটররা এখন কাজ করছেন। তাঁরা চমৎকার কাজ করছেন। তবে বিদেশি অপারেটর দিয়ে টার্মিনাল পরিচালনায় বিভিন্ন দেশের বন্দরগুলোয় যেভাবে কাজ হচ্ছে, এখানেও সেভাবে হবে। পতেঙ্গা টার্মিনাল পরিচালনায় সৌদি আরবের রেড সি গেটওয়ের সঙ্গে নেগোসিয়েশন (সমঝোতা) চলছে। মোটকথা, বিদেশি যারা ভালো প্রস্তাব দেবে, আর যাদের অভিজ্ঞতা বেশি, তারাই কাজ পাবে।’

মতবিনিময় সভায় বন্দরের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মো. হাবিবুর রহমান, সদস্য (অর্থ) মোহাম্মদ শহীদুল আলম, পরিচালক (প্রশাসন) মো. মমিনুর রশিদ, সচিব মো. ওমর ফারুক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।