সাংবাদিক আনিস আলমগীরের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি সিপিজের
সাংবাদিক আনিস আলমগীরের বিরুদ্ধে আনা সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ অবিলম্বে প্রত্যাহার এবং নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তার অজুহাতে সংবাদমাধ্যমকে নিশানা করা বন্ধ করতেও আহ্বান জানিয়েছে বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিয়ে কাজ করা নিউইয়র্কভিত্তিক সংগঠনটি।
আজ বুধবার নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সিপিজে এ আহ্বান জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একাধিক সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ১৫ ডিসেম্বর (সোমবার) বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আনিস আলমগীরসহ আরও তিনজনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে টক শো এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালানো এবং নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে।
সিপিজের এশিয়া-প্যাসিফিক প্রোগ্রামের সমন্বয়কারী কুনাল মজুমদার বলেন, ‘সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা গণতন্ত্রের একটি স্তম্ভ। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এক নির্বাচনের কয়েক মাস আগে একজন সাংবাদিককে আটক করতে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ব্যবহার সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের অঙ্গীকার নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ তৈরি করেছে। বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে মুক্তি দিতে হবে এবং সরকারের সমালোচনা করে মতামত প্রকাশের কারণে গণমাধ্যমকর্মীদের নিশানা করা বন্ধ করতে হবে।’
বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।
সিপিজের প্রতিবেদনে বলা হয়, আনিস আলমগীর ২০০১ সালে আফগানিস্তান এবং ২০০৩ সালে ইরাক থেকে যুদ্ধের প্রতিবেদন করে পরিচিত লাভ করেন। জ্যেষ্ঠ এই সাংবাদিককে ১৪ ডিসেম্বর (রোববার) রাজধানীর একটি ব্যায়ামাগার থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) গ্রেপ্তার করে।
এক ব্যক্তির মামলার ভিত্তিতে আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মামলার বাদী নিজেকে জুলাই আন্দোলনের একজন সংগঠক বলে পরিচয় দেন।
সিপিজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দোষী সাব্যস্ত হলে আনিস আলমগীরের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং বড় অঙ্কের জরিমানা হতে পারে।
তবে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের কোন ধারায় আনিসের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তা নিশ্চিত হতে পারেনি সংগঠনটি। কারণ, তদন্ত শুরুর আনুষ্ঠানিক নথি বা এফআইআরের কপি তারা সংগ্রহ করতে পারেনি।
সিপিজের নিজস্ব নথিপত্রে দেখা যায়, বাংলাদেশে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা সম্প্রতি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। শুধু ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অন্তত ১৭ জন সাংবাদিক হামলার শিকার হয়েছেন। নিরাপত্তা-সংক্রান্ত আইনের অধীনে একাধিক গ্রেপ্তার ও আটকেরও খবর জানা গেছে।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে সিপিজের তরফে ঢাকা মহানগর পুলিশের সঙ্গে ই-মেইলে যোগাযোগ করা হলেও তাঁরা তাৎক্ষণিক কোনো জবাব দেয়নি।