মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর জামুকার চেয়ারম্যান হওয়ার বিধান নিয়ে রুল

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী পদাধিকারবলে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) চেয়ারম্যান ও সচিবের সদস্য হওয়াসংক্রান্ত বিধান কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল সোমবার রুলসহ আদেশ দেন।

বগুড়ার গাবতলী উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা নওয়াব আলী মণ্ডল ১০ মে রিটটি করেন। রিটে তাঁর মুক্তিযোদ্ধা গেজেট বাতিলের প্রজ্ঞাপন, ভাতা বন্ধ ও কাউন্সিল গঠনসংক্রান্ত জামুকা আইনের ৫ (১) (ক) ও ৫ (১) (খ) ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। এ বিধান অনুসারে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও সচিব সদস্য হবেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তৌফিক ইনাম, তাঁর সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী অনীক হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।

হাইকোর্ট নওয়াব আলী মণ্ডলের মুক্তিযোদ্ধা গেজেট বাতিলসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন স্থগিতের পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাঁর ভাতা অব্যাহত রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন।

আদেশের বিষয়টি জানিয়ে আজ মঙ্গলবার আইনজীবী তৌফিক ইনাম প্রথম আলোকে বলেন, ২০২২ সালের আইনের ৬ ধারা অনুসারে জামুকার অন্যতম প্রধান কাজ গেজেটভুক্ত কোনো মুক্তিযোদ্ধা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নয় বলে তদন্তে প্রতীয়মান হলে তাঁর গেজেট বাতিলের জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা এবং নতুন মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে সুপারিশ করা। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ও সচিব একই সঙ্গে জামুকার সর্বোচ্চ পদে আসীন হওয়ায় জামুকার নির্বাহী প্রধান হিসেবে যে সুপারিশ পাঠান, সেটিই মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত হিসেবে প্রকাশিত হয়। জামুকা যখন একজন মুক্তিযোদ্ধার গেজেট বাতিলের জন্য মন্ত্রণালয়ের কাছে সুপারিশ করে, তখন গেজেট বাতিলের আগে মন্ত্রণালয় তাঁকে অভিযোগ খণ্ডন বা শুনানির কোনো ধরনের সুযোগও দেয় না।

এই আইনজীবী আরও বলেন, জামুকা আইনের ৮ ধারা অনুসারে জামুকার চেয়ারম্যান, অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী জামুকার সব নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী এবং তিনি মন্ত্রণালয়ের প্রধান। সে কারণে প্রকৃত অর্থে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় একই প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তদন্তকারী ও বিচারক একই ব্যক্তি, যা ন্যায়বিচারনীতির পরিপন্থী—মূলত এসব যুক্তিতে রিটটি করা হয়।