ক্ষমতার অপব্যবহার বেনজীরদের মতো ‘ফ্রাঙ্কেনস্টাইন’ তৈরি করছে: টিআইবি
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের অবৈধভাবে বিপুল সম্পদ অর্জনের চিত্র উঠে আসছে, তাতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলছে, উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিদের ক্ষমতার লাগামহীন অপব্যবহার বেনজীরদের মতো ‘ফ্রাঙ্কেনস্টাইন’ (দানব) তৈরি করছে, যা রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার জবাবদিহি কাঠামোকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
আজ সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে টিআইবি। বিজ্ঞপ্তিতে ক্ষমতার অপব্যবহারে সহযোগী ও সুরক্ষা প্রদানকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি। একই সঙ্গে জোরপূর্বক জমি দখলের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সাবেক আইজিপি বেনজীর ‘আইনের ভক্ষকের’ উৎকট দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বলে মনে করে টিআইবি। বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বেনজীর এত দিন ধরে দুর্নীতি করে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন, অথচ বিষয়টি সরকারের নজরে আসেনি—এমন দাবি মানার সুযোগ নেই।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘এমন প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে অপরাধ চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীনদের একাংশ শুধু তাঁকে সুরক্ষা দেয়নি, সহযোগিতাও করেছে, ক্ষেত্রবিশেষে উৎসাহও দিয়েছে, যা প্রশাসনযন্ত্রে, রাজনৈতিক অঙ্গনের ভেতরে ফ্রাঙ্কেনস্টাইন তৈরিতে অভূতপূর্ব ভূমিকা রাখছে।’
টিআইবির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাবেক পুলিশপ্রধানের বিপুল অর্থ ও জমির মালিকানার নতুন নতুন তথ্য প্রতিনিয়ত সামনে আসছে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই তিনি ভয় দেখিয়ে জমি দখল করেছেন কিংবা প্রকৃত মালিককে জিম্মি করে জমি বিক্রি করতে বাধ্য করেছেন। অনেক ক্ষেত্রেই এসব জমির মালিক ছিলেন সংখ্যালঘু। আর এই দখলদারির কাজে নিজ বাহিনীর পাশাপাশি অন্যান্য সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় সংস্থার সদস্যদের যথেচ্ছ ব্যবহারও করেছেন তিনি। বিষয়টিকে ন্যক্কারজনক আখ্যা দিয়ে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যেসব অভিযোগ জানা যাচ্ছে, তা সত্যিই ভয়ংকর।
বেনজীর আহমেদ দেশ ছেড়েছেন—গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন খবর প্রসঙ্গে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বেনজীরের মতো আলোচিত ব্যক্তির সবার অজান্তে দেশ ছেড়ে যাওয়া সত্যিই অবাক হওয়ার মতো। তাঁর এই বিদেশে চলে যাওয়ার ঘটনা যোগসাজশের মাধ্যমে হয়েছে কি না, ব্যাংক থেকে অর্থ উত্তোলন ও তা বিদেশে পাচারে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কর্মকর্তাদের যোগসাজশ ছিল কি না কিংবা তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত বাস্তবে শুধুই লোকদেখানো কি না—এমন প্রশ্ন ওঠা মোটেও অমূলক নয়। পুলিশের সাবেক প্রধানকে দুর্নীতির দায়ে আইনের আওতায় আনলেই হবে না, তাঁকে সুরক্ষা বা সহযোগিতা দেওয়া সব ব্যক্তিকেই বিচারের আওতায় আনতে হবে।’