মুক্তির পর দুবাই থেকে ফিরতে চান বেশির ভাগ নাবিক

সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে থাকা বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর এই ছবি গত ১৫ মার্চ প্রকাশ করেছিল ভারতীয় নৌবাহিনীছবি: ভারতীয় নৌবাহিনীর এক্স পোস্ট থেকে নেওয়া

সোমালিয়ার উপকূলে এখনো জিম্মি রয়েছে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। জলদস্যুদের কবল থেকে নাবিকসহ জাহাজটি এখনো মুক্ত হয়নি। তবে জাহাজটি মুক্ত হলে যাতে দ্রুত নাবিকদের ফিরিয়ে আনা যায়, সে জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে জাহাজের মালিকপক্ষ। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে জাহাজটি মুক্ত হলে নাবিকেরা কোথা থেকে সাইন অফ (জাহাজের কর্ম হতে অব্যাহতি) করবেন, তার তালিকা জাহাজের ক্যাপ্টেনকে দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে মালিকপক্ষ। আজ মঙ্গলবার নাবিকদের সূত্রে পাওয়া এমন তথ্য নিশ্চিত হয়েছে প্রথম আলো।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, মালিকপক্ষের নির্দেশনার পর জাহাজের ২৩ নাবিকের মধ্যে ১৮ জন সংযুক্ত আরব আমিরাতের বন্দর থেকে সাইন অফ করবেন বলে সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। বাকি পাঁচজন জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছালে সাইন অফ করবেন বলে জানিয়েছেন।

গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগর থেকে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাই করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। জাহাজটি সোমালিয়া উপকূলে নেওয়ার ৯ দিনের মাথায় দস্যুরা মুক্তিপণের জন্য জাহাজের মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ করে। নানা পর্যায়ে দর-কষাকষির পর দস্যুদের সঙ্গে সমঝোতার অগ্রগতি হয়েছে বলে মালিকপক্ষ জানিয়েছে। তবে এখনো চূড়ান্ত সমঝোতার কথা স্বীকার করেনি মালিকপক্ষ।

জানতে চাইলে জাহাজের মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের আলোচনার অগ্রগতি হচ্ছে। আশা করছি, কম সময়ের মধ্যে নাবিকদের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত করতে পারব।’

জাহাজটি মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে দস্যুদের কবলে পড়ে। জাহাজটি মুক্ত হলে প্রথমে নেওয়া হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি বন্দরে। সেখানে কয়লা খালাস করে জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়ে আসার কথা রয়েছে। এ কারণে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে কারা সাইন অফ করবেন, তাঁদের তালিকা প্রস্তুত করছে মালিকপক্ষ। যতজন নাবিক সংযুক্ত আরব আমিরাতের বন্দর থেকে নেমে যাবেন, সমানসংখ্যক নাবিক বাংলাদেশ থেকে সেখানে পাঠানো হবে। নতুন নাবিকেরা যোগ দেবেন এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে। এরপরই সংযুক্ত আরব আমিরাতের বন্দর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে ফিরিয়ে আনা হবে জাহাজটি।

জিম্মি জাহাজ ঘিরে সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণ করে একাধিক নাবিক প্রথম আলোকে বলছেন, সাধারণত দস্যুদের সঙ্গে দর-কষাকষি চূড়ান্ত হলে এমন প্রক্রিয়া শুরু করে মালিকপক্ষ। দর-কষাকষির পর এক-দুই সপ্তাহ লাগে নাবিকদের মুক্ত করতে। এ সময় মুক্তিপণের টাকা পরিশোধ এবং জাহাজ ফিরিয়ে আনা-সংক্রান্ত প্রক্রিয়াগুলোর কাজ এগিয়ে নিতে হয়।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, জাহাজটি মুক্ত হলে কখন কী করতে হবে, তার আগাম পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মালিকপক্ষ এমন প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে। এমন পরিকল্পনার অর্থ হলো জাহাজটি মুক্ত হওয়ার পর পরিকল্পনা অনুযায়ী সবকিছু দ্রুত বাস্তবায়ন করা যায়।