জেকেজির সাবরিনার জামিন মঞ্জুর, মুক্তিতে বাধা নেই

সাবরিনা শারমিন হোসেন
ফাইল ছবি

করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা নিয়ে প্রতারণার মামলায় দণ্ডিত জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান চিকিৎসক সাবরিনা শারমিন হোসেনকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এক আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ সোমবার বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। এ মামলায় জামিন হওয়ায় সাবরিনার মুক্তিতে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী।

করোনার ভুয়া প্রতিবেদন দেওয়ার ওই মামলায় গত বছরের ১৯ জুলাই রায় দেন ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট। রায়ে সাবরিনা ও তাঁর স্বামী আরিফুল হক চৌধুরীসহ ৮ জনকে ১১ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

আইনজীবীর তথ্যমতে, রায়ে তিনটি ধারায় (৪ বছর, ৪ বছর ও ৩ বছর—সব মিলিয়ে ১১ বছর) সাবরিনাকে ১১ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে তিনি ঢাকার অ্যাডিশনাল মেট্রোপলিটন সেশন জজ আদালতে আপিল করে জামিন চেয়ে বিফল হন। চলতি বছর জামিন আবেদন নামঞ্জুরের আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন তিনি।

আদালতে সাবরিনার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. মাসুদুল হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পি।

পরে মো. মাসুদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, সাবরিনার নাম এজাহারে ছিল না। তাঁর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও নেই। অপর ছয় আসামি জামিনে আছেন। আবেদনকারী নারী তিন বছর ধরে কারাগারে আছেন—এসব যুক্তিতে জামিন চাওয়া হয়। আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্ট সাবরিনাকে জামিন দিয়েছেন। এ মামলায় জামিন হওয়ায় সাবরিনার মুক্তিতে আইনগত কোনো বাধা নেই।

আরও পড়ুন

অবশ্য ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পি প্রথম আলোকে বলেন, আলোচনার সাপেক্ষে জামিন আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

করোনার নমুনা সংগ্রহ ও ভুয়া প্রতিবেদন দেওয়ার অভিযোগে ২০২০ সালের ২৩ জুন জেকেজি হেলথ কেয়ারের সিইও আরিফুল, কর্মচারী হুমায়ুন কবির, তাঁর স্ত্রী তানজিনা পাটোয়ারীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে তেজগাঁও থানার পুলিশ। পরদিন ২৪ জুন হুমায়ুন ও তানজিনা ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। একই বছরের ১২ জুলাই সাবরিনাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসক ছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করে কর্তৃপক্ষ। জালিয়াতির ঘটনায় কামাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় ওই মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট সাবরিনাসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।

এ মামলায় দণ্ডিত অপর ছয় আসামি হলেন জেকেজির সমন্বয়ক সাঈদ চৌধুরী, জেকেজির সাবেক কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির, তাঁর স্ত্রী তানজিনা পাটোয়ারী, বিপ্লব দাস, শফিকুল ইসলাম ও জেবুন্নেসা।

আরও পড়ুন