জাহাঙ্গীরনগরে ছাত্র ইউনিয়নের দুই নেতাকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে মশালমিছিল

ছাত্র ইউনিয়নের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি অমর্ত্য রায় ও সাধারণ সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলীর এক বছরের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে উপাচার্য এসে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। বুধবার রাত পৌনে আটটার দিকেছবি প্রথম আলো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের দুই নেতাকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে মশালমিছিল করেছেন একদল শিক্ষার্থী। প্রগতিশীল বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত এই শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে ছাত্র ইউনিয়ন নেতাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবনের দেয়ালে বঙ্গবন্ধুর দেয়ালচিত্র মুছে ধর্ষণবিরোধী দেয়ালচিত্র আঁকার অভিযোগে মঙ্গলবার ছাত্র ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি অমর্ত্য রায় ও সাধারণ সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এর প্রতিবাদে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে ওই মশালমিছিল বের হয়। মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে উপাচার্য মো. নূরুল আলমের বাসভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। সমাবেশ শেষে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন তাঁরা। এ সময় তাঁদের কাছে ‘ছবি আঁকার স্বাধীনতা লাগবেই লাগবে’, ‘কথা বলার স্বাধীনতা লাগবেই লাগবে’, ‘অবিলম্বে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার কর, করতে হবে’ লেখাসংবলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।

ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি অমর্ত্য রায় ও সাধারণ সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলীকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে মশালমিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার রাত পৌনে আটটার দিকে
ছবি: প্রথম আলো

সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সহসভাপতি আশফার রহমান বলেন, ‘তারা বলছে, আমরা নাকি বঙ্গবন্ধুর দেয়ালচিত্র মুছে আরেকটি দেয়ালচিত্র এঁকেছি। কিন্তু আমরা কোনো দেয়ালচিত্র মুছিনি। একটি আধা মোছা দেয়ালচিত্রের ওপর আমরা ধর্ষণের প্রতিবাদ জানাতে আরেকটি দেয়ালচিত্র এঁকেছি। ওই স্থানে বঙ্গবন্ধুর চিত্র আঁকার আগে ছাত্র ইউনিয়নের একটি দুর্নীতিবিরোধী দেয়ালচিত্র ছিল। করোনাকালীন বন্ধের সময়ে সেখানে বঙ্গবন্ধুর চিত্র অঙ্কন করা হয়েছিল। প্রশাসন রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা করার সিদ্ধান্তও নিয়েছে। আমরা আইনবিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেছি। সংবিধানে বঙ্গবন্ধুর যে প্রতিকৃতি সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে, তা হলো অফিস বা দপ্তরে টাঙিয়ে রাখা ছবি। অবিলম্বে এই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে হবে।’

শিক্ষার্থীরা বাসভবনের সামনে অবস্থান নেওয়ার প্রায় দেড় ঘণ্টা পর উপাচার্য নূরুল আলম আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘এটা সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত ছিল। এই সিদ্ধান্তের বাইরে কিছু করার ক্ষমতা আমার নেই। তোমরা তোমাদের দাবিগুলো কালকে সকালে লিখিত আকারে আমাকে দাও। আমি কিছু করতে পারব কি না, জানি না। কিন্তু দেখব। কালকে দুপুরে আমার সঙ্গে আমার কার্যালয়ে দেখা করো।’ এরপর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এদিনের মতো কর্মসূচি শেষ করে চলে যান।

এদিকে ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নেতাকে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে আগামী শুক্রবার বেলা সাড়ে তিনটায় শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে প্রতিবাদী সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে। ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে ওই কর্মসূচি পালন করা হবে বলে এক বার্তায় জানানো হয়েছে।