এহসানুলের মুখে হাসি ফোটানো কনস্টেবলকে পুরস্কৃত করলেন সিএমপি কমিশনার
অনলাইনে প্রতারণার শিকার যুবকের পাশে দাঁড়ানো পুলিশ কনস্টেবলকে পুরস্কৃত করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়।
আজ বুধবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে কনস্টেবল জিহাদ হাসানের হাতে ১০ হাজার টাকা ও সনদ তুলে দেন সিএমপি কমিশনার।
কৃষ্ণ পদ রায় প্রথম আলোকে বলেন, ভালো কাজ করায় উৎসাহ বাড়ানোর জন্য জিহাদকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। ওই যুবকের সঙ্গে প্রতারণায় জড়িত প্রতারকদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য গোয়েন্দা পুলিশকে বলা হয়েছে।
সিএমপি কমিশনারের কাছ থেকে পুরস্কার পাওয়ার পর জিহাদ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুরস্কারের আশায় কাজ করিনি। তবে স্যারের (পুলিশ কমিশনার) কাছ থেকে কাজের স্বীকৃতি পাওয়ায় অনেক উৎসাহিত হয়েছি। এখন থেকে কাজ আরও বেশি করে করতে হবে।’
পুরস্কার বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন নগর পুলিশের উপকমিশনার (সদর) আবদুল ওয়ারীশ, উপকমিশনার (অপরাধ) নিষ্কৃতি চাকমা, অতিরিক্ত উপকমিশনার (অপরাধ) পংকজ দত্ত প্রমুখ।
গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোর অনলাইনে ‘সাইকেল পেয়ে এহসানুলের মুখে যে হাসি দেখেছি, তার মূল্য অনেক’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এটি নজরে আসার পর আজ জিহাদকে নগদ ১০ হাজার টাকা পুরস্কৃত করেন পুলিশ কমিশনার।
প্রথম আলোর প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, বাইসাইকেল চালিয়ে ডেলিভারি ম্যান হিসেবে যে টাকা পান, তা দিয়ে সংসার চালান এহসানুল আবেদীন (শিহাব) নামের এক যুবক। কিন্তু সেই সাইকেল মেরামতে খরচ বেশি পড়ায় বিক্রি করে দেন। এরপর ফেসবুক পেজে চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে নতুন একটি সাইকেল কিনতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হন এহসানুল। সাইকেল বিক্রির সব টাকা হারিয়ে রাস্তায় ঘুরতে থাকেন তিনি। তাঁর চোখের পানি দেখে নিজের ঈদের বোনাসের টাকা দিয়ে তাঁকে নতুন একটি বাইসাইকেল কিনে দিয়েছেন পুলিশ কনস্টেবল জিহাদ হাসান।
এহসানুলের বাসা নগরের বাকলিয়া এলাকায়। গত ২১ মার্চ ফেসবুকে ‘বাইসাইকেল শপিং’ নামের একটি পেজে বিজ্ঞাপন দেখেন। সেখানে ঈদ উপলক্ষে ৬৫ শতাংশ মূল্যছাড়ে সাড়ে তিন হাজার টাকায় বাইসাইকেল বিক্রির বিজ্ঞাপন দেখেন। প্রাথমিকভাবে বিকাশের মাধ্যমে ৫৫০ টাকা পাঠান। পরে আরও তিন হাজার টাকা পাঠান। ২৩ মার্চ তাঁর বাইসাইকেলটি পাওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে ফোন করে তাঁকে আরও ৩ হাজার ৫০০ টাকা পাঠাতে বলা হয়। বলা হয়, এ টাকা সাইকেলটি বুঝিয়ে দেওয়ার সময় ফেরত দেওয়া হবে। ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে তিনি ওই টাকাও দিয়ে দেন। কিন্তু সাইকেল আর বুঝে পাননি। একপর্যায়ে বুঝতে পারেন, প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
এহসানুলের এভাবে প্রতারণার শিকার হওয়ার বিষয়টি ১ এপ্রিল ফেসবুকে দেখতে পান পুলিশ কনস্টেবল জিহাদ হাসান। পরে তিনি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ইতিমধ্যে পেয়ে যান ঈদের বোনাস। আর সেই টাকায় ১৫ এপ্রিল ১৪ হাজার টাকা দিয়ে একটি বাইসাইকেল কিনে এহসানুলের হাতে তুলে দেন পুলিশ সদস্য জিহাদ।