সেরা গবেষণা ধারণাপত্র ও উদ্ভাবনী প্রস্তাবকে পুরস্কৃত করবে আইসিডিডিআরবি

যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য নিয়ে সেরা ‘গবেষণা ধারণাপত্র’ ও  ‘উদ্ভাবনী প্রস্তাব’কে পুরস্কৃত করবে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)। আগামীকাল বুধবার রাজধানীর পাঁচ তারকা একটি হোটেলে অনুষ্ঠেয় দিনব্যাপী জাতীয় সম্মেলনে এ পুরস্কার দেওয়া হবে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর মহাখালীতে আইসিডিডিআরবিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আইসিডিডিআরবির সাসাকাওয়া মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য অধিকার নিয়ে তরুণ ও নবীন গবেষকদের উৎসাহিত করা ও পৃষ্ঠপোষকতা দিতে গবেষণা ধারণাপত্র ও উদ্ভাবনী প্রস্তাব জমা দেওয়ার আহ্বান করেছিল আইসিডিডিআরবির অ্যাডভানসিং সেক্সুয়াল অ্যান্ড রিপ্রোডাকাটিভ হেলথ অ্যান্ড রাইটস (অ্যাডসার্চ)।

এরপর তরুণদের কাছ থেকে ১৫০টি গবেষণা ধারণাপত্র ও ১১০টি উদ্ভাবনী প্রস্তাব জমা পড়ে। যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য অধিকারসংক্রান্ত এসব ধারণাপত্র ও প্রস্তাব থেকে প্রাথমিকভাবে ১০০টি ধারণাপত্র ও ৫৭টি প্রস্তাবকে সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত করা হয়। সংক্ষিপ্ত তালিকা থেকে বিশেষজ্ঞদের নম্বরের ভিত্তিতে ২২টি গবেষণা প্রস্তাব ও ২১টি উদ্ভাবনী ধারণা উপস্থাপনার জন্য নির্বাচন করা হয়।

আজ মঙ্গলবার আইসিডিডিআরবিতে এগুলো উপস্থাপন করা হয়। সেখানে বিচার–বিশ্লেষণ করে দুটি বিভাগে সেরা একাধিক প্রস্তাব ও ধারণাকে নির্বাচন করা হবে। আর নির্বাচিত প্রস্তাব ও ধারণাগুলোকে আগামীকাল বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কৃত করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আইসিডিডিআরবির মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের বিজ্ঞানী আহমেদ এহসান মনসুর বলেন, সেরা ও সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত মোট ৭০টি গবেষণা প্রস্তাব ও উদ্ভাবনী ধারণা নিয়ে একটি উদ্ভাবনী ‘হাব’ গঠন করা হবে। আগামী ২ থেকে ৩ বছর এসব প্রস্তাব ও ধারণাকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হবে, যাতে এগুলোকে বাস্তব রূপ দেওয়া যায়। তিনি বলেন, ১৫০টি গবেষণা ধারণাপত্র ও ১১০টি উদ্ভাবনী প্রস্তাব জমা হওয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় তরুণ প্রজন্ম গবেষণার জন্য তৈরি। এখন তাঁদের পরিচর্যা করতে হবে, যাতে তাঁরা সমৃদ্ধ হন, গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি ও সমস্যার সমাধান করতে পারেন।

আগামীকালের জাতীয় সম্মেলন সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জাতীয় সম্মেলনে যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য অধিকার নিয়ে দুটি বৈজ্ঞানিক সেশন থাকবে। এতে বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন উপস্থাপনা তুলে ধরবেন। সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে বাংলাদেশে যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য বিস্তারে অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম তৌহিদুল আনোয়ার চৌধুরী, জাতীয় অধ্যাপক ডা. শাহলা খাতুন এবং বাংলাদেশের প্রজননস্বাস্থ্য গবেষণা ও কর্মসূচির অগ্রদূত হালিদা আকতারকে সম্মাননা দেওয়া হবে।

নানা জটিলতায় মৃত্যু

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে আহমেদ এহসানুর রহমান জানান, মাতৃস্বাস্থ্য জনিত জটিলতায় প্রতিবছর সারা বিশ্বে প্রায় দুই লাখ নারী মারা যান, বাংলাদেশে মৃত্যু হয় সাড়ে ছয় হাজার নারীর। প্রজনন স্বাস্থ্যজনিত বিভিন্ন রোগের সংক্রমণে প্রতিবছর বিশ্বে ৪৩ হাজার ও বাংলাদেশে প্রায় এক হাজার মানুষ মারা যান। অন্যদিকে জরায়ু ক্যানসারে বিশ্বে এক বছরে দুই লাখ ৮০ হাজার ৫০০ জন এবং বাংলাদেশে সাড়ে তিন থেকে চার হাজার নারীর মৃত্যু হয়। এ ছাড়া অনিরাপদ গর্ভপাতের কারণে বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ২০ হাজার নারী ও বাংলাদেশে প্রায় ২০০ নারী মারা যান।

সংবাদ সম্মেলনে আইসিডিডিআরবির মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের গবেষণাপ্রধান কামরুন নাহার, একই বিভাগের জ্যেষ্ঠ পরিচালক শামস এল আরেফিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।