হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত, উপনির্বাচনের বাধা কাটল

সুপ্রিম কোর্টফাইল ছবি

ঝিনাইদহ–১ আসনের উপনির্বাচনের তফসিল স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে পৃথক আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ বুধবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন। ফলে আসনটিতে উপনির্বাচন অনুষ্ঠানে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।

ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই গত ১৬ মার্চ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুতে আসনটি শূন্য ঘোষণা করে ২৩ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। ঘোষিত তফসিল অনুসারে সেখানে আগামী ৫ জুন ভোট হওয়ার কথা।

এই তফসিল স্থগিত চেয়ে করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে ৬ মে হাইকোর্ট উপনির্বাচনের তফসিল ২১ দিনের জন্য স্থগিত করেন। হাইকোর্টের এই আদেশ স্থগিত চেয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও ঝিনাইদহ–১ আসনের উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী নায়েব আলী জোয়ার্দ্দার পৃথক আবেদন করেন, যা আজ আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। দুই আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন।

আদালতে ইসির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান ভুইয়া। নায়েব আলী জোয়ার্দ্দারের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ ও আইনজীবী বি এম ইলিয়াস কচি। উপনির্বাচন স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদনকারী নজরুল ইসলামের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব।

আদেশের পর ইসির আইনজীবী মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান ভুইয়া প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত হওয়ায় উপনির্বাচনের কার্যক্রম পরিচালনায় আইনগত কোনো বাধা নেই। ঘোষিত তফসিল অনুসারে যথাসময়ে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৭ জানুয়ারি ভোট হয়। নির্বাচিত ব্যক্তিদের ফলাফলের গেজেট ৯ জানুয়ারি প্রকাশ করা হয়। ঝিনাইদহ-১ আসনে সংসদ সদস্য হিসেবে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবদুল হাই নির্বাচিত হন। তবে ঝিনাইদহ–১ আসনে ভোটে অনিয়মের অভিযোগ তুলে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলাম হাইকোর্টে নির্বাচনী আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুল দিয়ে ঝিনাইদহ-১ আসনে মো. আবদুল হাইকে বিজয়ী ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) যে গেজেট প্রকাশ করে, তা দুই মাসের জন্য স্থগিত করেন।

এ আদেশ স্থগিত চেয়ে মো. আবদুল হাই আপিল বিভাগে আবেদন করেন, যার ওপর ৫ ফেব্রুয়ারি চেম্বার আদালতে শুনানি হয়। সেদিন চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে ১৩ মে শুনানির জন্য পাঠান। আবদুল হাই সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব নেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ মার্চ তিনি মারা যান।

এরপর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে ২৩ এপ্রিল ইসি উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। এ অবস্থায় নির্বাচনী আবেদনের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উপনির্বাচনের তফসিল স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন নজরুল ইসলাম।