বিশ্ব হার্ট দিবস উপলক্ষে জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে বৈজ্ঞানিক সেমিনার ও শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার শেরেবাংলা নগরে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনের সার্বিক সহায়তায় ছিল রেনাটা পিএলসি।
দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্যে সকাল সাড়ে আটটায় রঙিন ব্যানার-প্ল্যাকার্ড হাতে শোভাযাত্রা বের করা হয়। এতে চিকিৎসক, শিক্ষার্থী ও স্বাস্থ্যকর্মীরা অংশ নেন। পরে সকাল নয়টায় ইনস্টিটিউটের কনফারেন্স হলে বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে বক্তারা হৃদ্রোগের কারণ, প্রতিরোধ এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটির সদস্যসচিব অধ্যাপক ডা. এ এফ খবির উদ্দিন আহমেদ। কার্ডিওলজি বিভাগ, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. খালেকুজ্জামান স্বাগত বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘সুস্থ হৃদয়ই সুস্থ জীবনের ভিত্তি। প্রায় ৮০ শতাংশ হৃদ্রোগ প্রতিরোধযোগ্য, যা হাঁটা, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, পরিমিত ঘুম ও ইতিবাচক জীবনযাপনের মাধ্যমে অর্জন সম্ভব। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত একটি হার্ট হেলদি নেশন গঠন করা।’
বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপনের এই অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ডা. মোহাম্মদ আনিসুল গনি খান। অনুষ্ঠানের সমাপনীতে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন রেনাটা পিএলসির চিফ মার্কেটিং অফিসার (সিএমও) মো. তানবীর সাজিব।
বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপনা পরিচালনা করেন সহকারী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আনিসুল গনি খান। এ সময় আলোচিত প্রবন্ধগুলোর মধ্যে ছিল ‘বাংলাদেশে হৃদ্রোগ-আমরা কোথায় আছি?’ শীর্ষক উপস্থাপনা। এতে সহযোগী অধ্যাপক ডা. এ কে এম মনোয়ারুল ইসলাম বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ, অপুষ্টি ও স্লিপ অ্যাপনিয়াকে হৃদ্রোগ বৃদ্ধির অন্যতম ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত করেন। তিনি এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপের তাগিদ দেন।
অন্যদিকে সহকারী অধ্যাপক ডা. তাইফুর রহমান আরেকটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি ধূমপান ত্যাগ, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, পর্যাপ্ত ঘুম, প্রতিদিন হাঁটা ও সচেতন জীবনযাপনকে হৃদ্রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি তিনি সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ বাড়াতে জনসচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেন।
আয়োজকেরা জানান, বিশ্ব হার্ট দিবস কেবল প্রতীকী দিবস নয়; বরং এটি হৃদ্রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতার একটি কার্যকর প্ল্যাটফর্ম। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ডা. মো. মহসিন হোসেন, অধ্যাপক ডা. সাবিনা হাশেম, অধ্যাপক ডা. আবদুল্লাহ শাহরিয়ার, সহযোগী অধ্যাপক ডা. এ এম জিয়াউল হক, সহকারী অধ্যাপক ডা. এম এ হাসনাতসহ অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথি।
অনুষ্ঠানের শেষে অতিথিদের ক্রেস্ট দেওয়া হয়। পরে বিনা মূল্যে ব্লাডপ্রেশার মনিটরিং, ব্লাড গ্রুপিং ও ইসিজি কর্মসূচির মাধ্যমে দিনব্যাপী কার্যক্রম শেষ হয়।