তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৩৪ সাক্ষীকে হাজির হতে পরোয়ানা

ফাইল ছবি

১৯ বছর আগে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ১১ জনকে পুড়িয়ে মারার মামলার বিচার এখনো শেষ হয়নি। ৫৭ সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ২৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। এ অবস্থায় মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৩৪ সাক্ষীকে হাজির হতে পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। আজ রোববার তৃতীয় অতিরিক্ত চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ এইচ এম শফিকুল ইসলাম এ আদেশ দেন।

চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, দীর্ঘদিন এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীরা সাক্ষ্য দিতে হাজির হচ্ছেন না। এ অবস্থায় ৩৪ সাক্ষীকে হাজির হতে পরোয়ানা দিয়েছেন আদালত।

রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দাখিলকারী চিকিৎসকসহ সব সাক্ষীকে হাজির করতে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আগামী ৬ মার্চ মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।

২০০৩ সালের ১৮ নভেম্বর রাতে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর সাধনপুর গ্রামের শীলপাড়ায় সংখ্যালঘু পরিবারের ১১ জনকে ঘরে আটকে বাইরে থেকে তালা দিয়ে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। পল্লিচিকিৎসক বিমল শীল সেদিন ঘর থেকে বেরিয়ে প্রাণে বেঁচে যান। কিন্তু আগুনে পুড়ে মারা যান তাঁর বাবা তেজেন্দ্র লাল শীল (৭০), মা বকুল শীল (৬০), ভাই অনিল শীল (৪০), অনিলের স্ত্রী স্মৃতি শীল (৩২) এবং অনিলের তিন সন্তান রুমি শীল (১২), সোনিয়া শীল (৭) ও ৪ দিন বয়সী কার্তিক শীল। আগুনে প্রাণ হারান বিমল শীলের চাচাতো বোন বাবুটি শীল (২৫), প্রসাদি শীল (১৭), এনি শীল (৭) এবং কক্সবাজার থেকে বেড়াতে আসা বিমল শীলের খালু দেবেন্দ্র শীল (৭২)।

ভয়ংকর এ ঘটনার পর থেকে বিমল শীল বাড়ি ছেড়ে চট্টগ্রাম শহরে থাকছেন। খালি পড়ে আছে ভিটেমাটি। নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে সেখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে।

পরিবারের সদস্যদের পুড়ে যাওয়া ছবি দেখছেন বিমল শীল
ছবি: প্রথম আলো
আরও পড়ুন

আদালত সূত্র জানায়, এ ঘটনায় বিমল শীল বাদী হয়ে মামলা করেন। ঘটনার ২৫ মাস পর মামলায় প্রথম অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। অভিযোগপত্রে বাঁশখালীর বিএনপি নেতা আমিনুর রহমানের নাম বাদ দেওয়া হয়। এতে বাদী নারাজি দিলে আদালত পুনরায় মামলা তদন্তের নির্দেশ দেন। এর দুই বছর পর পুলিশ আবারও আমিনুরকে বাদ দিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। সেবারও বাদী নারাজি দেন। সর্বশেষ চতুর্থ দফায় ২০১১ সালের ৯ জানুয়ারি আমিনুরসহ ৩৯ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। আমিনুরের দাবি, রাজনীতি করার কারণে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাঁর নাম জড়ানো হয়েছে। ইতিমধ্যে আরেক আসামির নাম রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।