ডেঙ্গুতে ঢাকা মেডিকেলে ১০১ ও মুগদা হাসপাতালে ১০০ জনের মৃত্যু

মুগদা হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীরা
ফাইল ছবি প্রথম আলো

ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছেই। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশে এত মৃত্যু এর আগে হয়নি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক দিনেই সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে হাসপাতালটিতে ১০১ জনের মৃত্যু হলো। এমন আর কখনো হয়নি।

এ পরিস্থিতি শুধু ঢাকা মেডিকেলে নয়। মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ১০০ হয়েছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এত মৃত্যু এই হাসপাতালেও এর আগে হয়নি। এই দুই হাসপাতালে রোগীর চাপ দেশের অন্যান্য হাসপাতালের চেয়ে কিছুটা বেশি।

গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দেওয়া তথ্য বলছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (বুধবার সকাল আটটা থেকে গতকাল সকাল আটটা পর্যন্ত) সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৫৯৩। এর মধ্যে ১৮ বছরের কম বয়সী শিশু আছে প্রায় ১০০ জন।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ২ হাজার ৩০৮ জন নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে এই বছর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ২৩ হাজার ৮০৮। জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, বাস্তবে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আরও কয়েকগুণ বেশি।

ঢাকা মেডিকেল মৃত্যু বেশি কেন

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ পর্যন্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন ৪ হাজার ৫৮৬ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ১০১ জন। মৃত্যুহার ২ দশমিক ২। অর্থাৎ ১০০ রোগী ভর্তি হলে ২ জনের বেশি মারা যাচ্ছেন। এই হার অনেক বেশি।

কেন এত মৃত্যু হচ্ছে—এমন প্রশ্নের উত্তরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন অধিকাংশ রোগী আসছেন ঢাকার বাইরে থেকে। যাঁরা আসছেন, তাঁরা খুব খারাপ অবস্থা নিয়েই আসছেন। অনেকে চিকিৎসার কোনো সুযোগই দিচ্ছেন না।’

মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ পর্যন্ত ভর্তি হয়েছেন ৮ হাজার ৯১৪ জন, এর মধ্যে মারা গেছেন ১০০ জন। মৃত্যুহার ১। তবে এই হার সারা দেশের তুলনায় বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে সারা দেশে ২০০ জন হাসপাতালে ভর্তি হলে একজন মারা যাচ্ছেন।

তবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও মৃত্যুহার বেশি। ঢাকা মেডিকেলের পরেই এই হাসপাতালে মৃত্যুহার বেশি। এ পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১ হাজার ৭৬৪ রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৩৪ জন। মৃত্যুহার ১ দশমিক ৯।

২১ আগস্ট বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আয়োজনে রাজধানীতে ডেঙ্গু পরিস্থিতির পর্যালোচনা হয়। তাতে বলা হয়, মারা যাওয়া ৬২ শতাংশ রোগীর লক্ষণ ছিল ডেঙ্গু শক সিনড্রোম, ২৫ শতাংশ রোগীর লক্ষণ ছিল এক্সপেনডেড ডেঙ্গু সিনড্রোম। ডেঙ্গু হেমোরেজিক জ্বরে মৃত্যু হয় ১০ শতাংশ রোগীর। আর বাকি ৩ শতাংশ রোগীর মৃত্যু হচ্ছে ডেঙ্গু জ্বরে। অবশ্য এসব রোগী ডেঙ্গু জ্বরের পাশাপাশি অন্য রোগেও ভুগছিলেন।