ডায়াবেটিস থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে: অধ্যাপক কাজী দীন মোহাম্মদ

জাতীয় অধ্যাপক মোহাম্মদ ইব্রাহিমের ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি। বুধবার রাজধানীর বারডেম জেনারেল হাসপাতালে
ছবি: প্রথম আলো

দেশে মানুষের মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ হচ্ছে স্ট্রোক। যেকোনো মুহূর্তে মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারে। এর অন্যতম কারণ ডায়াবেটিস। ডায়াবেটিস পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে স্ট্রোকের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

আজ বুধবার জাতীয় অধ্যাপক মোহাম্মদ ইব্রাহিমের ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় এসব কথা বলেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সস ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক কাজী দীন মোহাম্মদ। রাজধানীর বারডেম জেনারেল হাসপাতালে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি এই স্মরণসভার আয়োজন করে।

অধ্যাপক কাজী দীন মোহাম্মদ বলেন, স্ট্রোক প্রতিরোধ করা যায়। এ জন্য স্ট্রোকের ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে জানতে হবে এবং নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। স্ট্রোকের উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি হচ্ছে—উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ধূমপান, হৃদ্‌রোগ, স্থূলতা, অতিরিক্ত মদ্যপান, কিডনির সমস্যা ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন।

স্ট্রোকের লক্ষণ সম্পর্কে এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, শরীরের ভারসাম্য না রাখতে পারা, চোখে ঘোলা দেখা, মুখ বেঁকে যাওয়া, হাতে বা পায়ে দুর্বলতা দেখা দেওয়া, কথা জড়িয়ে যাওয়া। এসবের কোনো কিছু দেখলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে রোগীকে। কারও স্ট্রোক হলে দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন। স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীদের তিন ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা দিতে পারলে রোগী ঝুঁকিমুক্ত থাকে। আক্রান্তের ছয় ঘণ্টা পর চিকিৎসা পেলে জটিলতা তৈরি হয়।

কাজী দীন মোহাম্মদ বলেন, ডায়াবেটিস পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে স্ট্রোকের কারণ হতে পারে। স্ট্রোকের ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকতে হলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার বিকল্প নেই।

একক বক্তৃতার আগে বারডেম হাসপাতাল ও ডায়াবেটিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ইব্রাহিম সম্পর্কে আলোচনা হয়। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক আতিউর রহমান বলেন, অধ্যাপক ইব্রাহিম রাষ্ট্রের সহায়তা নিলেও তিনি সমাজকে সংগঠিত করে এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখিয়েছিলেন। সমাজ যদি সচেষ্ট হয়, মঙ্গলের পক্ষে থাকে, তাহলে সমাজে যারা বাস করে, তারা ভালো থাকে। অধ্যাপক ইব্রাহিম সমাজের এই শক্তির কথা ভালোভাবেই জানতেন।

অধ্যাপক ইব্রাহিম চিরনবীন ছিলেন, গুণী সংগঠক ছিলেন বলে উল্লেখ করেন ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান। তিনি বলেন, সমাজে কোনো পরিবর্তন আনতে হলে সরকারের সঙ্গে সহযোগিতার কোনো বিকল্প নেই।

এই জাতীয় অধ্যাপক আরও বলেন, স্বাস্থ্য খাত ডিজিটাল হচ্ছে। সবাইকে সেভাবে প্রস্তুত হয়ে এগোতে হবে।

স্মরণসভায় অধ্যাপক ইব্রাহিম সম্পর্কে মূল বক্তব্য দেন ডায়াবেটিক সমিতির ল্যাবরেটরি সার্ভিসেসের পরিচালক অধ্যাপক এম শওকত হাসান। তিনি বলেন, হরমোন ও ডায়াবেটিস-সম্পর্কিত গবেষণাকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন অধ্যাপক ইব্রাহিম।

স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন ডায়াবেটিক সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, বারডেমের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এম কে আই কাইয়ুম চৌধুরী প্রমুখ।