উত্তাল সাগরে ৩০০ প্রতিমা বিসর্জন

কক্সবাজার সৈকতে ভারী বর্ষণ উপেক্ষা করে উত্তাল সমুদ্রে ভক্তদের প্রতিমা বিসর্জন। আজ বিকেলে
ছবি: প্রথম আলো

ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত উত্তাল হয়ে পড়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে অব্যাহত রয়েছে বৃষ্টিপাত। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে বৃষ্টিতে ভিজে বিষাদ মনে হাজারো ভক্ত উত্তাল সাগরে ভাসিয়ে দিলেন প্রায় ৩০০ প্রতিমা।

দেখা গেছে, বেলা আড়াইটা থেকে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে ট্রাক বোঝাই করে আনা হয় প্রতিমা। বিকেল চারটার আগে কক্সবাজার পৌরসভা, সদর উপজেলা, ঈদগাঁও, বাংলাবাজার, উখিয়া, টেকনাফ, খুরুশকুল, চৌফলদণ্ডী থেকে আনা হয় প্রায় ৩০০ প্রতিমা। প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে লাবণী পয়েন্টে নির্মিত হয় বিজয়া মঞ্চ। বেলা তিনটা থেকে মঞ্চে চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিজয়া দশমীর আলোচনা সভা।

বিকেল সাড়ে পাঁচটায় মন্ত্রপাঠের মধ্য দিয়ে প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়। সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার মধ্যে একে একে ৩০০ প্রতিমা সাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। তখন সৈকতে চলছিল ভারী বর্ষণ। এর মধ্যেও প্রতিমা বিসর্জন উপভোগ করতে সৈকতে সমবেত হন বিপুলসংখ্যক পর্যটক।  

সৈকতে বিজয়া দশমীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া। জেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি উজ্জ্বল করের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক বেন্টু দাশের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন কক্সবাজারের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, আশেক উল্লাহ রফিক, কানিজ ফাতেমা আহমেদ, জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান, পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম, ট্যুরিস্ট পুলিশ সুপার মো. জিললুর রহমান, আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী, জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম, জেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি রণজিত দাশ প্রমুখ।  

গত বছর সমুদ্রসৈকতের লাবণী পয়েন্টে কয়েক লাখ মানুষের উপস্থিতিতে চার শতাধিক প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছিল। প্রতিমা বিসর্জন দেখতে তখন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের লোকজন (পর্যটক) সৈকতে ছুটে আসেন।

জেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বেন্টু দাশ বলেন, এবারের বিসর্জন উৎসবে চার লাখ মানুষের সমাগম আশা করা হয়েছিল। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাব এবং ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে লোকসমাগম কিছুটা কম হয়েছে। তবে লাখো মানুষের উপস্থিতিতে প্রতিমা বিসর্জন উৎসব সমাপ্ত করতে পারায় খুশি এই সম্প্রদায়ের মানুষ।

বৈরী পরিবেশের কারণে এবার চকরিয়ার শতাধিক প্রতিমা সেখানকার মাতামুহুরী নদী ও রামুর শতাধিক প্রতিমা বাঁকখালী নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়েছে।

জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন বলেন, প্রতিমা বিসর্জন সম্পন্ন করতে সড়কে যাতে যানজট সৃষ্টি না হয়, সে লক্ষ্যে সার্বিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। দুপুরের পর সৈকত সড়ক, হোটেল–মোটেল জোন সড়ক ও কলাতলী সড়কে যানবাহনের চলাচল সীমিত রাখা হয়।