গ্রীষ্মকালে ফার্নিচারের যত্ন নেবেন যেভাবে
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রতিবছরই গ্রীষ্মের তীব্রতা বাড়ছে। এ কারণে ঘরের বাইরে আমরা বেশ গরম অনুভব করছি। ঘরের ভেতরেও অনেক অস্বস্তিবোধ হচ্ছে। উষ্ণ তাপমাত্রা শুধু আমাদের ব্যক্তিজীবনেই প্রভাব ফেলছে না। তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ঘরের আসবাবেরও কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। তাহলে ফার্নিচার যেমন ক্ষতি থেকে বাঁচবে, তেমনি বাড়তি খরচ ও ফার্নিচার পরিবর্তনের মতো সমস্যা থেকেও বাঁচা যাবে। এই গ্রীষ্মে কীভাবে আপনার ঘরে থাকা ফার্নিচারগুলোর যত্ন নেবেন? চলুন জেনে নেওয়া।
সূর্যের আলো থেকে দূরে রাখা
দিনের বেশির ভাগ সময় যদি আপনার লিভিং, ডাইনিং বা বেডরুমের ফার্নিচার গ্রীষ্মের সূর্যের প্রখর আলোতে থাকে, তাহলে রং নষ্ট হয়ে যাওয়া, বেঁকে যাওয়া, এমনকি ফার্নিচারে ফাটলের মতো নানাবিধ সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই সরাসরি সূর্যের আলো পড়ে, এমন জায়গায় ফার্নিচার থাকলে সেগুলো অন্য যে জায়গায় রোদ পড়ে না, সেখানে সরিয়ে রাখুন।
কভার পরিবর্তন করা
কোনো ফার্নিচার সরানো সম্ভব না হলে ঘরে সূর্যের আলো প্রবেশের স্থানে মোটা পর্দা ব্যবহার করতে পারেন। সূর্যের আলোতে সোফার বা ফেব্রিক–সংবলিত যেকোনো ফার্নিচারের রং নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই এসব ফার্নিচারের ওপর কভার ব্যবহার করুন এবং কভারগুলো যেন উন্নত মানের ও ফার্নিচারে ভালোভাবে ফিট করে, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
সঠিক আদ্রর্তা বজায় রাখা
আদ্রর্তা বেড়ে যাওয়ায় কাঠের ফার্নিচারে ফাটল ও বাঁকা হয়ে যাওয়ার সমস্যা হামেশাই দেখা যায়। ঘরের সঠিক আদ্রর্তা বজায় রাখতে ডিহিউমিডিফাইয়ার অথবা এয়ারকন্ডিশনার ব্যবহার করতে পারেন। তা ছাড়া ঘরের এমন কোনো বিদ্যুৎ–চালিত জিনিস, যা চালু থাকার কারণে অনেকটাই গরম হয়, তার আশপাশেও ফার্নিচার রাখবেন না।
ঘুণপোকা থেকে সাবধান
কাঠের তৈরি ফার্নিচারের প্রধান শত্রু হচ্ছে ঘুণপোকা। গ্রীষ্মকালে ফার্নিচারে ঘুণপোকার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ঘরের কোনো ফার্নিচারে যদি ঘুণপোকার উপদ্রব দেখা যায়, তাহলে এড়িয়ে না গিয়ে যথাযথ পেস্ট কন্ট্রোল ব্যবহার করুন। অন্যথায় ঘুণপোকা মাধ্যমে ওই ফার্নিচারের ক্ষতির আশঙ্কা যেমন বাড়ে, তেমনি ঘরে থাকা অন্য ফার্নিচারও ঘুণপোকার আক্রমণের শিকার হতে পারে।
নিয়মিত যত্ন নেওয়া
নিয়মিত যত্নের মাধ্যমে ফার্নিচারের স্থায়িত্ব অনেকটাই বাড়ানো সম্ভব। ফার্নিচারে কোনো ধরনের সমস্যা দেখা দিলে আগে থেকেই ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। তাই নিয়মিত চেক করুন, ফার্নিচারের নাট বা জয়েনারিজে কোনো সমস্যা আছে কি না। তা ছাড়া কোনো ফার্নিচারের রং বিবর্ণ হয়ে গেলে তা আবার বার্নিশ করিয়ে নিন। এই গরমে বাতাসের সঙ্গে বাইরের ধুলাবালু প্রায়ই ঘরে চলে আসে, যা ফার্নিচারের ওপরও পড়ে। তাই কাঠের ফার্নিচারসহ ফেব্রিক–সংবলিত ফার্নিচারগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করুন। এ ক্ষেত্রে সপ্তাহে কমপক্ষে একবার ফার্নিচার পরিষ্কারে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করা যেতে পারে।
খেয়াল রাখতে হবে
আমরা অনেকেই গরমের সময় বাইরে থেকে এসেই ফ্রিজের ঠান্ডা পানি পান করি। ফ্রিজ থেকে বের করা পানির বোতল সরাসরি কাঠের কোনো টেবিল বা ফার্নিচারের ওপর রাখা উচিত নয়, এতে ফার্নিচার ফুলে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তা ছাড়া গরমে ঘরে এসির বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে। অনেক সময় এসিতে সমস্যা থাকার কারণে এসি থেকে পানি পড়ে, ফলে অনেক ফার্নিচার ফুলে নষ্ট হয়ে যায়। তাই ঘরে থাকা এসিতে কোনো সমস্যা আছে কি না, তা নিয়মিত চেক করতে হবে।
পোষা প্রাণী
আমাদের দেশে পোষা প্রাণী হিসেবে কুকুর ও বিড়ালই থাকে বেশির ভাগ মানুষের পছন্দের তালিকায়। এসব পোষা প্রাণীও কিন্তু ফার্নিচার নষ্ট করে ফেলে। এগুলো সুচালো নখ দিয়ে সাধারণত ফেব্রিক–সংবলিত ফার্নিচারে আঁচড় কাটে এবং কাঠের ফার্নিচারেও স্ক্র্যাচ ফেলে দেয়। তাই এসব প্রাণীর নখ সব সময় ছোট রাখুন।
ভালো মানের ফার্নিচার কিনুন
ফার্নিচারের দীর্ঘস্থায়িত্ব অনেকটাই নির্ভর করে আপনি কোথা থেকে ফার্নিচার কিনেছেন বা কিনতে যাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে নন-ব্র্যান্ডের ফার্নিচার না নিয়ে ব্র্যান্ডেড ফার্নিচার, যেমন হাতিল ফার্নিচার রাখতে পারেন আপনার পছন্দের তালিকায়। এই ব্র্যান্ডের ফার্নিচার যথেষ্ট মজবুত ও নান্দনিক। কাঠের কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট ও যথাযথ সিজনিং করার পর ফার্নিচার প্রস্তুত করার ফলে যেকোনো ঋতুতেই হাতিলের তৈরি ফার্নিচারে সচরাচর তেমন কোনো সমস্যা দেখা দেয় না।