রাষ্ট্রপতি ৫ সেপ্টেম্বর ইন্দোনেশিয়া যাচ্ছেন

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন
ফাইল ছবি

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন আগামী ৫ সেপ্টেম্বর ইন্দোনেশিয়া সফরে যাচ্ছেন। সেখানে তিনি আসিয়ানের ৪৩তম শীর্ষ সম্মেলন এবং ১৮তম পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। সফরকালে দুটি সমঝোতা স্মারক সইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এ তথ্য জানান।

আব্দুল মোমেন বলেন, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট আগামী ৫-৭ সেপ্টেম্বর জাকার্তায় অনুষ্ঠেয় আসিয়ানের ৪৩তম শীর্ষ সম্মেলন এবং ১৮তম পূর্ব এশিয়া সম্মেলনে অংশ নেওয়ার লক্ষ্যে ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ) সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এই আমন্ত্রণে সম্মতি দিয়েছেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আসিয়ানের শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধন ও সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এ ছাড়া আসিয়ানের পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনে রাষ্ট্রপতি গেস্ট অব চেয়ার হিসেবে সমাপনী বক্তব্য দেবেন। তিনি ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি আয়োজিত নৈশভোজেও অংশ নেবেন।

আসিয়ানের শীর্ষ সম্মেলনে আসিয়ান সদস্যরাষ্ট্র এবং অংশীদার রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সহযোগিতা উন্নয়ন এবং শক্তিশালীকরণ নিয়ে আলোচনা করা হবে। এই সম্মেলনে আসিয়ান মেরিটাইম আউটলুক, আসিয়ান ইন্দো প্যাসিফিক আউটলুক এবং মিয়ানমার সম্পর্কিত ইস্যু নিয়ে আলোচনা করা হবে।

মন্ত্রী জানান, আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে আসিয়ান সচিবালয়, আইওআরএ ও প্যাসিফিক আইল্যান্ডস ফোরামের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হবে। আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অভ্যন্তরীণ শান্তি বজায় রেখে একটি মর্যাদাপূর্ণ আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করা।

রাষ্ট্রপতির এ সফরকালে উভয় দেশের রাষ্ট্রপতি পর্যায়ে একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, এ ছাড়া সম্মেলনের সাইডলাইনে মালয়েশিয়া, পূর্ব তিমুর, ভিয়েতনামসহ আরও দু-একটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধানের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

রাষ্ট্রপতির এ সফরে ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি দুটি সমঝোতা স্মারক সইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রথমটি হলো জ্বালানি ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতাবিষয়ক সমঝোতা, দ্বিতীয়টি হলো স্বাস্থ্যক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতাবিষয়ক সমঝোতা।

আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ আসিয়ানের সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপনের অংশ হিসেবে সংস্থাটির খাতভিত্তিক সংলাপের অংশীদার হওয়ার জন্য আবেদন করেছে। রাষ্ট্রপতির এ সফরে সংলাপের অংশীদার হওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের প্রার্থিতার বিষয়ে আরও জোরালোভাবে অনুরোধ করা যাবে।

পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনের মৌলিক উদ্দেশ্য এবং নীতি হলো পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বজায় রাখার লক্ষ্যে কৌশলগত, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ে সহযোগিতার জন্য বিস্তারিত সংলাপ এবং আলাপ-আলোচনা করা।

পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনে আলাপ-আলোচনার জন্য ছয়টি অগ্রাধিকার ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলো হলো পরিবেশ ও জ্বালানি, শিক্ষা, অর্থ, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সমস্যা-মহামারি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও আসিয়ান সংযোগ। এই অগ্রাধিকার ক্ষেত্রগুলোতে সহযোগিতা বিস্তারের জন্য কর্মপরিকল্পনাও তৈরি করা হয়েছে।  

পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনে অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতার মধ্যে খাদ্যনিরাপত্তা, বাণিজ্য ও অর্থনীতি, সমুদ্রনিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়েও আলোচনা হবে।