ঢাকা মেডিকেলে ফেলে যাওয়া হয়েছে এক প্রতিবন্ধী শিশুকে

শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডে ভর্তি করে মেঝেতে বিছানা পেতে দিয়েছে কর্তৃপক্ষছবি: সংগৃহীত

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুরোনো ভবনের শৌচাগারে ঢোকার পথে টেবিলের ওপর শোয়া অবস্থায় বাক্‌ ও শারীরিক প্রতিবন্ধী এক শিশুকে পাওয়া গেছে। তার বয়স ১০ থেকে ১২ বছর হবে। ওই শিশুর এখন ঠাঁই হয়েছে হাসপাতালের মেঝেতে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, শিশুটিকে কারা, কেন এখানে রেখে গেছে তা জানা যায়নি। তাকে বর্তমানে হাসপাতালের শিশু বিভাগের ২০৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেঝেতে বিছানা পেতে রাখা হয়েছে। তার কোনো দাবিদার পাওয়া না গেলে সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করে হাসপাতালের সমাজসেবা শাখার মাধ্যমে তার আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হবে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ওয়ার্ডে থাকা রোগীর পরিচর্যাকারীরা বুধবার সারা দিন ১১০ নম্বর ওয়ার্ডের শৌচাগারের প্রবেশমুখে একটি টেবিলের ওপর শিশুটিকে শুয়ে থাকতে দেখেন। প্রথমে কেউ বুঝতে না পারলেও দীর্ঘ সময় পরও শিশুটিকে একই স্থানে দেখতে পান তারা। তখন বুঝতে পারেন শিশুটির কোনো স্বজন নেই। পরে তারা ঘটনাটি হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়িতে জানান।

ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, হাসপাতালে চারদিকে ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা আছে। শিশুটিকে হাসপাতালে কারা রেখে গেছে, তা শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। হাসপাতালের পরিচালককে (ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক) বিষয়টি অবগত করে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি শিশুটি কথাও বলতে পারে না। ধারণা করা হচ্ছে, কেউ তাকে ফেলে গেছে।

১০৯ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন জুলেখা বেগম। তাঁর ছেলে ইমরান হোসেন বলেন, বুধবার সকাল সাতটার দিকে যখন শৌচাগারে যান, তখন শিশুটিকে টেবিলের ওপরে শোয়া দেখেছেন। তখন ভেবেছিলেন, পরিবারের কেউ হয়তো তাকে টেবিলে রেখে বাথরুমে গেছে। কিন্তু সারা দিন শিশুটি টেবিলের ওপর শোয়া ছিল।

হাসপাতাল পরিচালকের নির্দেশে বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে একজন ওয়ার্ড মাস্টার তাকে শিশু বিভাগের ২০৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করান। ওই ওয়ার্ডের একজন চিকিৎসক বলেন, শিশুটি বাক্‌ ও শারীরিক প্রতিবন্ধী। এ ছাড়া তার কোনো রোগ পাওয়া যায়নি।

আজ বিকেলে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক প্রথম আলোকে বলেন, শিশুটি বর্তমানে তাঁর ঠিকানায় হাসপাতালে ভর্তি আছে। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার কোনো ওয়ারিশ (দাবিদার) পাওয়া না গেলে থানা-পুলিশকে অবহিত করে হাসপাতালের সমাজসেবা শাখার মাধ্যমে তাকে কোনো আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।