চট্টগ্রামে ধরা পড়ছে না পর্যাপ্ত ইলিশ, বৃষ্টির আশায় জেলেরা

চড়া দাম হওয়ায় ইলিশের বাজারে ক্রেতা নেই। পাশাপাশি ইলিশের সরবরাহ কম হওয়ায় বিক্রেতারাও দোকানে তুলছেন না ইলিশ। চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাট বাজারে। আজ শুক্রবার সকালে তোলা
ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রামে লতিফপুর এলাকার জেলে সাধন জলদাস আজ শুক্রবার সাগরে গিয়ে সাত কেজি ইলিশ পেয়েছেন। তিনি বলছিলেন, প্রতিবছর এ সময়ে কয়েক মণ ইলিশ ধরা পড়ে। নৌকার খরচই ঠিকঠাক তুলতে পারছেন না এ বছর। বৃষ্টি না থাকার কারণে ইলিশ নেই জালে, ধারণা সাধন জলদাসের।

সাধারণত পূর্ণিমা ও অমাবস্যার সময়ে যে জোয়ার হয়, সেই সময়কেই ‘জো’ বলা হয়। আর ‘জো’র সময় ইলিশ বেশি পাওয়ার আশায় থাকেন জেলেরা। পাশাপাশি বৃষ্টি ও দক্ষিণের হাওয়া বইলে সে সময় ইলিশ ধরা পড়ে বেশি। গত কয়েক দিনে সাগরে গিয়ে পর্যাপ্ত ইলিশ না পেয়ে খালি হাতে ফিরছেন জেলেরা। জেলেরা বলছেন, জো থাকলেও বৃষ্টি না থাকায় ইলিশ ধরা পড়ছে না। ফলে নৌকা, জ্বালানি ও অন্যান্য খরচ মেটাতেই হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা।

ইলিশ সরবরাহ কমে যাওয়ায় চট্টগ্রাম নগরের বাজারগুলোতে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। আজ শুক্রবার নগরের বহদ্দারহাট, চকবাজার ও কর্ণফুলী কমপ্লেক্স বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকারভেদে প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ থেকে ১ হাজার ৪৫০ টাকায়।

বাজারের অধিকাংশ মাছের দোকানে ইলিশ নেই। এই তিন বাজারের প্রায় ৩৫টি দোকানের কেবল ৮টিতে ইলিশের দেখা মিলেছে। এসব দোকানে ছোট আকারের ইলিশ ৮৫০ থেকে ৯৫০ টাকা, মাঝারি আকারের ইলিশ ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ ও বড় আকারের ইলিশ ১ হাজার ২৫০ থেকে ১ হাজার ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা বলছেন, প্রতিবার এ সময়ে ইলিশের প্রচুর সরবরাহ থাকে। এ বছর পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা না পড়ায় আড়ত পর্যায়ে ইলিশের দাম বেশি। তাই প্রভাব পড়েছে নগরের বাজারগুলোতে। বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারের মাছ বিক্রেতা আবদুল কাদের বলেন, বাজারে ক্রেতা নেই। কয়েক ক্রেতা এসে দাম শুনে চলে যান। বেশি দামে আড়ত থেকে কিনতে হচ্ছে, তাই খুচরা পর্যায়ে দাম বেশি।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ইলিশের স্বাভাবিক চক্র পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে করেন চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ। তিনি প্রথম আলোকে, প্রতিবছর মে মাসের শেষের দিক থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত বৃষ্টিতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ত। এ বছর বৃষ্টির দেখা মিলেছে আগস্টের শুরুতে। ফলে ইলিশের যে স্বাভাবিক চক্র, তার ওপর প্রভাব পড়েছে। তবে আশা করা যাচ্ছে, সামনের ‘জো’তে ইলিশ ধরা পড়বে জেলেদের জালে। পাশাপাশি বৃষ্টি হলে ইলিশ ধরার পরিমাণ আরও বাড়বে।