কুমিল্লার লালমাই পাহাড় কাটা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

কুমিল্লার লালমাই পাহাড় কাটা ও অন্যান্য ধ্বংসমূলক কার্যক্রম থেকে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, হাসান টেকনো বিল্ডার্স লিমিটেড ও হক এন্টারপ্রইজ জয়েন্ট ভেঞ্চার (জেভি) এবং ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্ককে বিরত রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কুমিল্লার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালকসহ (চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়) বিবাদীদের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রোববার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, হাসান টেকনো বিল্ডার্স লি. ও হক এন্টারপ্রইজ জয়েন্ট ভেঞ্চার (জেভি) এবং ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্কের কার্যক্রমের ফলে ইতিমধ্যে লালমাই পাহাড়ের প্রতিবেশব্যবস্থা, উদ্ভিদ, প্রাণী ও জীববৈচিত্র্যের যে ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপণ করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ওই রিট করে। আদালতে বেলার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ আশরাফ আলী, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এস হাসানুল বান্না।

বেলা জানায়, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার লালমাই মৌজায় অমূল্য প্রত্নসম্পদে ভরা লালমাই পাহাড় অবস্থিত। ১০–২০ লাখ বছরের প্রাচীন প্লায়স্টোসিন অধিযুগের লাল রঙের পললে ঢাকা এই পাহাড়। প্রতিদিন শত শত পর্যটক ও ভ্রমণপিপাসু এই পাহাড় দেখতে আসেন। সম্প্রতি এ পাহাড় কেটে পাহাড়ের মাটি বিভিন্ন স্থাপনা ও রাস্তা নির্মাণের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। কেটে ফেলা হচ্ছে পাহাড়ি প্রাকৃতিক বৃক্ষরাজি। এমনকি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের নামেও পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে ঐতিহ্যবাহী ও প্রত্ত্বতাত্বিক এ পাহাড় ক্রমে সমতল ভূমিতে রূপ নিচ্ছে।

এদিকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রসারণ প্রকল্পের জন্য ১৩১ দশমিক ২৭৮ একর পাহাড়ি ভূমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়। ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শন প্রতিবেদন থেকে তা স্পষ্ট হয়। এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে পাহাড় কাটা বন্ধে নোটিশ দেয়—এ সত্ত্বেও পাহাড় কাটা চলছে। যে কারণে বেলা ওই রিট করে।