বনশ্রীতে গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার, বাড়িতে আগুন দিলেন বিক্ষুব্ধরা

রাজধানীর বনশ্রীতে এই বাড়ির সামনে থেকে এক নারী গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধারের পর বিক্ষুব্ধ মানুষ আগুন দিয়েছেন।ছবি: প্রথম আলো

রাজধানীর বনশ্রীতে একটি বাড়ির সামনে থেকে এক নারী গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধারের পর বিক্ষুব্ধ মানুষ পাঁচতলা ভবনটিতে আগুন দিয়েছেন।

আজ রোববার সকালে এ ঘটনা ঘটে। আগুনে বাড়ির গ্যারেজে থাকা তিনটি গাড়ি ও একটি মোটরসাইকেল পুড়ে যায়। ভবনটির নিচতলাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সকালে বাড়ির সামনে আসমা বেগম (৪৫) নামে এক নারীর লাশ পাওয়া যায়। এরপর মানুষ জড়ো হয়। একপর্যায়ে তাঁরা বাড়ির নিচতলায় ভাঙচুর করে ও আগুন ধরিয়ে দেয়।

আগুনে বাড়ির গ্যারেজে থাকা তিনটি গাড়ি ও একটি মোটরসাইকেল পুড়ে যায়। ভবনটির নিচতলাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ছবি: প্রথম আলো

বনশ্রী সোসাইটির সম্পাদক (নিরাপত্তা) আহসান উল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, তিনি সকালে খবর পেয়ে বাড়িটিতে যান। বাড়ির মালিক দেলোয়ার হোসেন। দেলোয়ার জানিয়েছেন, নিহত আসমা বেগম তাঁর মেয়ের বাসার গৃহকর্মী। মেয়ের বাসা মিরপুরে।

আহসান উল্লাহ আরও বলেন, দেলোয়ার দাবি করেছেন, তাঁর মেয়ের পরিবার গৃহকর্মীসহ গাজীপুরে বেড়াতে গিয়েছিল। সেখান থেকে তাঁরা বনশ্রীতে আসেন। রাতে সবাই বনশ্রীর বাসায় ছিলেন। ভোরে সবাই যখন ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন আসমা ছাদে গিয়ে সেখানে থেকে পড়ে গিয়ে থাকতে পারে।

স্থানীয় বাসিন্দা জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ভবনটির মূল ফটকের সামনে ওই গৃহকর্মীর লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। তাঁর নাক দিয়ে রক্ত পড়ছিল। তিনি বলেন, লাশটি এমনভাবে পড়ে ছিল, তাতে মনে হয়েছে যেন কেউ শুয়ে আছে। ছাদ থেকে পড়েছে বলে তাঁর মনে হয়নি।

জাকির হোসেন এ–ও বলেন, লাশটিতে তিনি কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখেননি।

এদিকে বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ লোকজনের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম খান প্রথম আলোকে বলেন, ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে পুলিশ সকালে সেখানে যায়। সেখানে বিশৃঙ্খলার ঘটনায় পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকা মহানগর দক্ষিণের পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনাটি আত্মহত্যা না হত্যা, তা আমরা নিশ্চিত নই। দুই ধরনের সন্দেহ রেখেই তদন্ত হচ্ছে।’

মিজানুর বলেন, বাড়ির মালিক দাবি করেছেন গৃহকর্মী আসমা মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। তিনি বনশ্রীতে আগে কাজ করেছেন। তাঁর পরিচিত গৃহকর্মীদের কেউ কেউ মানসিক ভারসাম্যহীনতার কথা জানিয়েছেন। তবে এ–সংক্রান্ত ডকুমেন্টেটেশন (নথি) পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় বাড়িটির চারতলায় গিয়ে মালিকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তাঁরা কথা বলতে রাজি হননি।