কিশোর গ্যাংয়ের হামলা, ছুরিকাঘাতে কিশোর নিহত
চট্টগ্রাম নগরে ছুরিকাঘাতে এক কিশোর নিহত হয়েছে। তার নাম মোহাম্মদ আজিম (১৭)। গতকাল সোমবার রাত ১১টার দিকে নগরের ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদ চৌমুহনী বরফের কল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে চার কিশোর–তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নিহত আজিম চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজে শ্রমিক হিসেবে কাজ করত। আর গ্রেপ্তার চারজনের কেউ দিনমজুর, কেউ অটোরিকশাচালক। এ ঘটনায় নিহত কিশোরের বড় বোন বিলকিস আক্তার বাদী হয়ে ডবলমুরিং থানায় মামলা করেছেন।
নিহত কিশোরের পরিবারের দাবি, আসামিরা কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িত। হত্যা মামলার বাদী বিলকিস আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা তাঁর ভাইকে খুন করেছে। তাদের ফাঁসি চান তিনি। তাঁর ভাই কোনো কিছুর সঙ্গে জড়িত নয়। ছোটবেলায় তাঁদের বাবা মারা যান। মানুষের বাসায় কাজ করে ভাইকে বড় করেছেন।
পুলিশের দাবি, দুই পক্ষ কিশোর–তরুণ হলেও কিশোর গ্যাং নয়। পূর্ববিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গে নিহত আজিমের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে চৌমুহনী বরফকল এলাকায় ১৫ থেকে ২০ জনের একটি কিশোর দল এসে হামলা চালায় আজিমের ওপর। তাকে মারধরের এক পর্যায়ে ছুরিকাঘাত করা হয়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন এসে আজিমকে মারতে আসা কিশোর গ্যাং সদস্যদের ধাওয়া দেন। এ সময় অনেকে পালিয়ে গেলেও এক কিশোরকে আটক করে পুলিশে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বাকিরা পালিয়ে গেলেও রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মো. নয়ন, মো. সোহেল, মো. মামুনসহ আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের বয়স ১৮ থেকে ২১ বছরের মধ্যে।
নগর পুলিশের উপকমিশনার (পশ্চিম) নিহাত আদনান তাইয়ান প্রথম আলোকে বলেন, চারজনকে গ্রেপ্তারের পর ঘটনায় ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করে পুলিশ।
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফজলুল কাদের পাটোয়ারী প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ঘটনার আগের দিন রোববার অটোরিকশা নিয়ে আজিম ও নয়নের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। এরই জেরে পরদিন খুনের ঘটনা ঘটে।
উল্লেখ্য, নগরে ২০০ কিশোর গ্যাং সক্রিয় রয়েছে। একেকটি দলে রয়েছে ৫ থেকে ১৫ জন। নগরজুড়ে এদের সদস্যসংখ্যা অন্তত ১ হাজার ৪০০। পুলিশ বলছে, কিশোর গ্যাংয়ের পৃষ্ঠপোষকতা বা প্রশ্রয় দিচ্ছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পাঁচজন ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ ৬৪ ‘বড় ভাই’। গত ৬ বছরে ৫৪৮টি অপরাধের ঘটনায় কিশোর গ্যাং জড়িত বলে জানায় পুলিশ। এর মধ্যে খুনের ঘটনা ঘটেছে ৩৪টি।