বাহারি নকশাতে মেহেদি হাতে মেতে উঠুন ঈদের খুশিতে

হেনা-শিল্পীদের আঁকা মেহেদির নকশা নিয়ে আয়োজন করা হয়েছে গ্লো অ্যান্ড লাভলি ‘বাহারি নকশাতে, মেহেদি হাতে’ ক্যাম্পেইনছবি: বিজ্ঞপ্তি

ঈদ উৎসবে শিশু ও নারীদের জন্য অন্যতম অনুষঙ্গ মেহেদিরাঙা দুই হাত। একসময় ঈদের আগের দিন অনেকেই মেহেদিগাছ খোঁজার ‘অভিযানে’ নামত। মেহেদিপাতা জোগাড় করে বাটা হতো রাতভর। ‘গাঢ় রং’ নিশ্চিত করতে মেহেদিপাতার সঙ্গে ব্যবহার করা হতো চুন, খড় আর কাঁঠালগাছের ডালের লাল অংশ।

সময় পাল্টেছে। রাত জেগে মেহেদিগাছের পাতা জোগাড় করে, বেটে হাতে লাগানোর ঝঞ্ঝাট বর্তমানে নেই বললেই চলে। বাটা মেহেদির সুঘ্রাণের জায়গা এখন টিউব মেহেদির দখলে। নানা রকম সুবিধার পাশাপাশি মেহেদির নকশাতেও এসেছে নতুনত্ব ও বৈচিত্র্য।

এবারের ঈদে মেহেদির নকশা কেমন হতে পারে এবং মেহেদি লাগানোর ক্ষেত্রে কী ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, সে বিষয়ে জানিয়েছেন ‘মেহেদি আর্ট শিলা’র স্বত্বাধিকারী আয়েশা আক্তার শিলা।

বিয়ের অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে ‘ভারী নকশা’ পছন্দ হলেও ঈদে সাধারণত মেহেদির নকশায় সবাই ‘সাধারণ কিন্তু বৈচিত্র্যময়তা’ই পছন্দ করেন। তবে নকশাটা নির্ভর করে গ্রাহকের পছন্দের ওপর।

এবারের ঈদের ট্রেন্ড হিসেবে অ্যারাবিক ও মানডালার চলই বেশি। এ ছাড়া রয়েছে জলছাপ, চেক বা গ্রিডস, ফ্লোরাল, মিনিমালিজম, অলংকারের নকশা (ঝুমকা, চেইন, নূপুর, আংটি), ইমারতের আদলে মেহেদির নকশা, ট্যাটু স্টাইল, গোল নকশা, আঙুল নকশা, পানপাতা বা গম্বুজ ইত্যাদি।

অর্গানিক, ইন্ডিয়ান ও ইনস্ট্যান্ট—বাজারে তিন ধরনের মেহেদি পাওয়া যায়। তবে এতে স্বস্তি পান না অনেকেই। তাই প্রাকৃতিক উপায়ে অনেকেই ঘরে তৈরি করেন বিভিন্ন রঙের মেহেদি। এর মধ্যে রয়েছে কমলা, লাল বাদামি, গাঢ় বাদামি ইত্যাদি।

কোন হাতে কেমন নকশা

সব হাতে সব ধরনের নকশা মানাবে না। সরু হাতে একটু ভরাট নকশাই ভালো লাগে আর ভারী হাতের জন্য গোল হেনা নকশা মানানসই।

ভরাট নকশার ক্ষেত্রে চিকন ও মোটা—দুই ধরনের লাইন ব্যবহার করতে হবে। না হলে হাত আরও চওড়া লাগবে। তবে লম্বা হাতের জন্য আদর্শ মানডালা নকশা।

শুধু নকশা পছন্দ করলেই হবে না। আয়েশা আক্তার শিলার মতে, মেহেদি লাগানোর আগে-পরে মানতে হবে কিছু নিয়ম।

মেহেদি লাগানোর আগে-পরে

মেহেদি লাগানোর তিন দিন আগে থেকে হাতে ব্লিচ করা যাবে না। মেহেদি দেওয়ার আগে ভালো করে হাত ধুয়ে শুকিয়ে নিতে হবে। যদি হাতে মরা কোষ থাকে, তাহলে মেনিকিউর করে পরিষ্কার করে মেহেদি দিলে রং গাঢ় হবে।

হাতে মেহেদি দিয়ে সারা রাত রেখে দিতে পারলে ভালো। না হলে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা রাখতে হবে। পরের দিন শুকনা মেহেদি ভালো করে পরিষ্কার করে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে।

পরিমাণমতো লেবুর রস ও চিনিমিশ্রিত তুলা দিয়ে আলতোভাবে ডিজাইনের ওপরে লাগিয়ে শুকিয়ে নিলে মেহেদির রং গাঢ় এবং স্থায়ী হবে। তবে লেবুর রস বেশি লাগানো যাবে না।

ঘরে ভিক্স বা বাম থাকলে মেহেদি শুকিয়ে যাওয়ার পর হাতে লাগাতে হবে। এরপর সারা রাত রেখে দিলে মেহেদির রং গাঢ় হবে। দ্রুত বা পাঁচ মিনিটে রং হয়ে যাবে—এমন মেহেদি কেনার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। এ রকম মেহেদিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় অনেকের ত্বক। তাই পুরো হাতে ব্যবহারের আগে হাতের কোথাও একটু মেহেদি লাগিয়ে দেখা উচিত যে কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না।

হেনা-শিল্পীদের জন্য সুখবর

শখের বশে বা পেশাদার শিল্পী হিসেবে যাঁরা নকশা করতে ভালোবাসেন, তাঁদের জন্য সুখবর। হেনা-শিল্পীদের আঁকা মেহেদির নকশা নিয়ে আয়োজন করা হয়েছে গ্লো অ্যান্ড লাভলি ‘বাহারি নকশাতে, মেহেদি হাতে’ ক্যাম্পেইন। আয়োজনটির সহযোগিতায় রয়েছে প্রথম আলো ডটকম।

১৫ এপ্রিল ২০২৪-এর মধ্যে নিজের নকশা করা মেহেদি রাঙানো হাতের ভিডিও বা ছবি পাঠিয়ে দিন [email protected] মেইলে অথবা প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এই ক্যাম্পেইনের যেকোনো ভিডিওর কমেন্ট বক্সে।

বাছাইকৃত মেহেদির নকশা প্রকাশিত হবে প্রথম আলো ডটকমে। সেরা মেহেদি নকশাকারদের জন্য থাকবে আকর্ষণীয় উপহার।