গণমাধ্যমকর্মীদের পেশাদারি হতে হবে, আস্থার সংকট কাটাতে হবে

‘শাহ আলমগীর জার্নালিজম এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৪’ পেয়েছেন আমাদের সময় সম্পাদক আবুল মোমেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তন, ঢাকা, ২২ ফেব্রুয়ারিছবি: দীপু মালাকার

সমাজে ভীতির সংস্কৃতি তৈরি হচ্ছে। মানুষ যে মুক্তভাবে চিন্তা করবে, সে জায়গাটা ঠিক থাকছে না। গণমাধ্যমকর্মীরা তা তুলে ধরতে পারছেন না। এ অবস্থায় নিষ্ঠা-নৈতিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করা গুণী সাংবাদিকদের কাছ থেকে অন্যদের শিক্ষা নিতে হবে। গণমাধ্যমকর্মীদের পেশাদারি হতে হবে। আস্থার সংকট কাটাতে হবে।
প্রয়াত সাংবাদিক শাহ আলমগীরের জন্মদিন ও তাঁর নামে প্রবর্তিত পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক, সাংবাদিকতার শিক্ষকেরা এসব কথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি)।

এবার ‘শাহ আলমগীর জার্নালিজম এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৪’ পেয়েছেন দৈনিক আমাদের সময় সম্পাদক আবুল মোমেন। তাঁর হাতে ক্রেস্ট, সম্মানী তুলে দেন পুরস্কার প্রদান জুরিবোর্ডের চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

অনুষ্ঠানে আরেফিন সিদ্দিক বলেন, গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর মানুষের আস্থার সংকট রয়েছে। তবে এই আস্থার সংকটের মাঝেও সমাজে কিছু কিছু মানুষ আছেন, যাঁদের বিশ্বাস করা যায়, যাঁদের ওপর আস্থা রাখা যায়। শাহ আলমগীর সে ধরনের একজন মানুষ ছিলেন। তিনি নিজের কথা কখনো চিন্তা করেছেন বলে মনে হয় না।

পুরস্কার গ্রহণের পর দেওয়া বক্তব্যে গণমাধ্যমকর্মীদের আপসে না যাওয়ার আহ্বান জানান আবুল মোমেন। তিনি বলেন, সাংবাদিকেরা স্বাধীন অবস্থান তৈরি করতে পারছেন কি না, তা সমাজ তাঁদের কীভাবে দেখে তার মাধ্যমে দেখা যায়। এখন প্রশ্ন করার সময় এসেছে, সমাজ কি সাংবাদিকদের আস্থায় নিয়েছে?

সমাজে একটা অব্যবস্থা বিরাজ করছে বলে উল্লেখ করেন আবুল মোমেন। তিনি বলেন, সমাজে ব্যাধি তৈরি হচ্ছে। ভীতির সংস্কৃতি তৈরি হচ্ছে। মানুষ যে মুক্তভাবে চিন্তা করবে, সেই জায়গাটা ঠিক থাকছে না। সেটাকে সাংবাদিকেরা তুলে ধরতে পারছেন না। এই তুলে না ধরার বিষয়টি ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আবুল মোমেন বলেন, সাধারণভাবে মনে হয়, অনেক কিছুর সমালোচনা হচ্ছে। নানা রকম দুর্নীতি তুলে ধরা হচ্ছে। কিন্তু সামগ্রিকভাবে সমাজে যে ধরনের ঘটনা ঘটছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে এসব অতি নগণ্য ঘটনা।

বন্ধুরা হারিয়ে গেলে তাঁদের স্মরণ করতে না চাওয়ার প্রবণতা সমাজে আছে বলে মন্তব্য করেন জুরিবোর্ডের সদস্য ও প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান। তিনি বলেন, কোনো কোনো পুরস্কার নিজেই ধন্য হয় যোগ্য মানুষকে দিতে পেরে। এই পুরস্কার একজন গুণী মানুষকে দেওয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

জুরিবোর্ডের সদস্য ও বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, শাহ আলমগীর গুণী সাংবাদিক ছিলেন। আবুল মোমেনও গুণী সাংবাদিক। তাঁদের মতো পেশাদারি হতে হবে।  

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক মফিজুর রহমান, বিজেসির সদস্য শাকিল আহমেদ, প্রয়াত শাহ আলমগীরের সহধর্মিণী ফৌজিয়া বেগম।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিজেসির চেয়ারম্যান রেজোয়ানুল হক। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মাছরাঙা টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক (সিএনই) রাশেদ আহমেদ।